অনলাইনভিত্তিক বই বিপণন প্রতিষ্ঠান রকমারি ডট কমের উদ্যোগে আয়োজিত হলো ‘নগদ-রকমারি বইমেলা বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ অনুষ্ঠান। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত রকমারি প্ল্যাটফর্ম থেকে সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের লেখকদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে রকমারির পক্ষ থেকে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
ফিকশন, নন-ফিকশন, ধর্মীয় এবং ক্যারিয়ার ও একাডেমিক- এই চার শাখায় চারজন লেখক এবং চারটি বইকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়া একইসঙ্গে ২১টি ক্যাটাগরির ২১ জন লেখক ও ২১টি বইকেও সম্মাননা জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে।
বেস্টসেলার লেখক হিসেবে ফিকশন বিভাগে তরুণ তাসরিফ খান, নন-ফিকশন শাখায় মুহাম্মদ ইলিয়াস কাঞ্চন, ধর্মীয় বিভাগে আরিফ আজাদ এবং ক্যারিয়ার ও অ্যাকাডেমিক বিভাগে মোত্তাসিন পাহলভী পুরস্কার অর্জন করেন। এসব বিভাগে সম্মাননা পাওয়া বইগুলো হলো যথাক্রমে কিংবদন্তি পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত বাইশের বন্যা, আদর্শ থেকে প্রকাশিত বিজনেস ব্লুপ্রিন্ট, সত্যায়ন থেকে প্রকাশিত কুরজান থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ এবং ইনফিনিটি পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত ম্যাজিক ম্যাথ বই।
এ ছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বেস্টসেলার হয়েছেন উপন্যাসে সাদাত হোসাইন, সায়েন্স ফিকশনে জাফর ইকবাল, কমিক ও রম্যতে অন্তিক মাহমুদ, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধে আসিফ নজরুল, জীবন ইতিহাসে মহিউদ্দিন আহমদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন ফকির, আত্ম-উন্নয়ন ও মোটিভেশনে প্রিতম মুজতাহিদ, বিবিধ শাখায় ড. আমিনুল ইসলাম, কুরআন ও হাদিসে জোবায়ের আল মাহমুদ, ইসলামি ইতিহাস-ঐতিহ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ, ইসলামী আদর্শ ও মতবাদে মিরাজ রহমান, ভাষা ও অভিধানে সাইফুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ভর্তি শাখায় বিজ্ঞানবিদ্যা টিম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয় সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল, একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং রকমারি ডট কমের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বই নিয়ে পিছিয়ে থাকা একটা জাতি আমরা। তবে আমাদের জন্য আনন্দের বিষয় এটা, বাংলাদেশের একটা ইকমার্স কোম্পানি তাদের পণ্য হিসেবে বই নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকাশকদের জন্য সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ বই বিক্রি করা। সেই কাজটি সহজ করে দিয়েছে রকমারি ডট কম।
অনলাইনে বইয়ের পাইরেসি বন্ধ করতে কাজ করবেন জানিয়ে জব্বার বলেন, এখন অনলাইনে বইয়ের পাইরেসি হচ্ছে। আমাকে দিনে অনেকেই জানান, কোথাও কোথাও বইয়ের পিডিএফ বিক্রি হচ্ছে। আপনারা যদি এমনটা দেখেন, আমাদের জানাবেন। আমি আমার সাধ্যের মধ্যে সবটুকু চেষ্টা করব ডিজিটাল দুনিয়ায় বইয়ের পাইরেসি বন্ধ করতে।
কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, একটা সময় আজিজ সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, শাহবাগসহ বিভিন্ন নামিদামি জায়গায় বইয়ের দোকান থাকলেও তা ধীরে ধীরে বিভিন্ন কারণে হারিয়ে গেছে। সেই জায়গাটা দখল করেছে অন্যকিছু। ফলে যারা বই পড়েন, তারা খুঁজে খুঁজে বই এনেছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে। সেদিক থেকে বই আহরণের কাজটিকে সহজ করেছে রকমারি। অন্যান্য পণ্য আনলেও বইয়ের প্রতি তাদের যেন আলাদা নজর থাকে, তার জন্য আলাদা প্রত্যাশা থাকবে।
রকমারি ডট কমের পরিচালনা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, প্রকাশকরা একসময় আমাদের নিয়ে হাসতেন তবে এখন তারা আমাদের তাদের বন্ধু মনে করে। আমরা শুরু থেকে গুটি গুটি করে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের বাইরেও ৩০টি দেশে আমরা এখন বই পাঠাচ্ছি। এতদিন মনে করা হতো যে রকমারি একটা প্ল্যাটফর্ম যারা বই ডেলিভারি করি। তবে আগামীতে আমরা উদ্যোক্তা প্রকাশকদের নিয়ে কাজ করতে চাই। আগামীতে আমরা ই-বুক, অডিও বুক আনতে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন