দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলের বিখ্যাত পাখি ম্যাকাও লালন-পালন করেন ঢাকার খিলগাঁও এলাকার তরুণী আনিলা আক্তার। ১১ বছর ধরে পালন করা ওই পাখিটির নাম দিয়েছেন ‘মলি’। তিনি যেখানে যান, পোষা মলি থাকে সঙ্গে। গত রোববার রিকশায় করে মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন পান্থপথ এলাকায়। সঙ্গে ছিল মলিও। তারা পানি ভবনের সামনে যেতেই ছোঁ মেরে মলিকে ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্ত! এরপর ঘটনা গড়ায় থানা পুলিশ পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত দুই দিন পর মলিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
মলিকে উদ্ধার করা গেলেও ছিনতাকারীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ বলছে, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আনিলা জানান, ১১ বছর আগে মাত্র কয়েক মাস বয়সী ম্যাকাও পাখিটি কেনেন তিনি। এরপর নাম রাখেন মলি। পরম যত্নে পালন করা মলি তার পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বহু শব্দ বলতে পারে সে। দিনের বেশির ভাগ সময়েও থাকে তার সঙ্গে। রোববার তিনি মায়ের সঙ্গে একটি কাজে পান্থপথ যান। সেখানে রিকশা থেকে পাখিটি ছিনিয়ে নেয় এক তরুণ। তিনি চিৎকার করলেও ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। তিনি রমনা ও কলাবাগান থানায় ছুটে গেলেও সেখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ছুটে যান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তরে। এরপর তেজগাঁও থানায় গিয়ে ঘটনা জানালে পুলিশ তৎপর হয়।
আনিলা আরও বলেন, পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি তিনি নিজেই কাটাবনে খোঁজ নেন। বিপদগ্রস্ত পশু-পাখি উদ্ধারে সহায়তা করা ‘রবিনহুড’ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের সহায়তা নেন। শেষ পর্যন্ত মলিকে ফিরে পেয়ে তার পুরো পরিবার আনন্দিত।
তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, তারা অভিযোগ পাওয়ার এক দিনের মধ্যেই পাখিটি উদ্ধার করেন। পুলিশের অভিযানের মুখে পান্থপথ এলাকাতেই সেটি ফেলে রেখে পালিয়েছিল দুর্বৃত্ত। এজন্য তাকে ধরা যায়নি। তবে ধরার চেষ্টা চলছে।
ম্যাকাও পাখির বসতি মূলত দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন বনে। ভেনেজুয়েলা, প্যারাগুয়ে, ব্রাজিল, বলিভিয়া, পেরুর বনাঞ্চলে এই পাখি দেখা যায়। বাংলাদেশে বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র ও ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে ম্যাকাও পাখি লালন-পালন করেন। ম্যাকাও পাখি সাধারণত ফলমূল ও বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবার খায়। ম্যাকাও বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে এ ধরনের পাখির একেকটির দাম ১ লাখ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত হয়।
মন্তব্য করুন