বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গান গেয়ে বাদাম বিক্রির টাকায় সংসার চলে প্রতিবন্ধী রাজুর  

বাদাম বিক্রি করছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রাজু মিয়া। ছবি : কালবেলা
বাদাম বিক্রি করছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রাজু মিয়া। ছবি : কালবেলা

জীবন সংগ্রামে এক লড়াকু সৈনিকের নাম রাজু মিয়া। তিনি একজন দৃষ্টিপ্রতীবন্ধী। দীর্ঘ ২৫বছর ধরে তিনি বাদাম বিক্রি করে যাচ্ছেন দিনাজপুরের বিরামপুর, নবাবগঞ্জ উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে। রাজু মিয়া বাদামের টোপলা ও বাদ্যযন্ত্র তবলা গলায় ঝুলিয়ে গান গেয়ে দর্শকের মন মাতানোর পর বাদাম বিক্রি করে চলেছেন দিনের পর দিন।

রাজু মিয়া (৪০) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া এলাকার আমবাগান গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে।

পরিবার-পরিজন নিয়ে বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। তার সংসারে তার মা মোছা. আনিছা বেগম (৫০) ও দুই ভাই এনামুল হক (২০) এবং আনারুল হক (২৫) রয়েছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, গ্রাম্য মেলা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে গান গেয়ে বাদাম বিক্রি করে থাকেন তিনি।

জীবন সংগ্রামে নিজের স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন তিনি। কারো কাছে হাত না পেতে কিংবা করুণায় বেঁচে না থেকে নিজের পরিশ্রমের আয় দিয়ে চলে তার সংসার। জন্মের পর থেকেই রাজু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।

রাজু প্রতিদিন বাদামের টোপলা এবং তবলা গলায় ঝুলিয়ে বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, অফিস চত্বর, হাট-বাজারে মধুর কণ্ঠে গান গেয়ে প্রথমে দর্শক জমান, একপর্যায়ে বাদাম বিক্রি শুরু করেন। প্রতিদিন বাদাম বিক্রি করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। আর ওই লাভের টাকা দিয়েই সন্ধ্যায় চাল-ডালসহ বাজার করে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে।

রাজু মিয়া বলেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে গান গেয়ে বাদাম বিক্রি করে আমার সংসার চলছে। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমি বিভিন্ন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যাই বাদাম বিক্রির জন্য। অথচ একটুও আরাম-আয়েশের চিন্তা করি না। বৃদ্ধ মা ও ছোট দুই ভাইয়ের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার চিন্তায় থাকি। তবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় গান গেয়ে বাদাম বিক্রি করার কাজ ততটা সুবিধাজনক নয়। বিভিন্ন জায়গায় চলফেরা করা অনেক কষ্টকর। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে একটি স্থায়ী দোকান বা ব্যবসা করতে পারলে সুবিধা হতো। এ বিষয়ে অনেককে সাহায্য করার কথা বললেও কেউ এগিয়ে আসে না। আমার এলাকার চেয়ারম্যানও আমাকে ততটা সাহায্য-সহযোগিতা করেননি। তবে উপজেলা সমাজসেবা থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন।

এ বিষয়ে জানতে নবাবগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাছান মো. সালেহ উদ্দিনকে একাধিকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন্নাহার কালবেলাকে বলেন, মাহমুদ ইউনিয়নের ভাদুরিয়ার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রাজু মিয়াকে কারোনাকালীন সময়ে ভাতাভোগী কার্ড দেওয়া হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জানা গেল কখন লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

ট্রাক্টর উল্টে একই পরিবারের ৩ নারী নিহত

প্যান্টের পকেটে বিশেষ কায়দায় লুকানো ছিল ২ কোটি টাকার স্বর্ণ

পুকুরে ভাসছিল গলা ও পা বাঁধা বৃদ্ধার মরদেহ

অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রণ পেলেন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ

ইউআইইউর শিক্ষকের বাংলাদেশ ব্যাংক’র সেমিনারে অর্থনীতির নবায়িত দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন

দম্পতির সিগারেট খাওয়ার ছবি ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি

লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তার গাড়িতে সশস্ত্র হামলা

১০

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বৈঠক 

১১

শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরি

১২

সিল্কি, শাইনি আর হেলদি চুল পেতে ঘরোয়া টিপস

১৩

আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নির্দেশ করে এমন ৫ সংকেত

১৪

বিশ্বকাপ ড্রয়ের আগে যে বার্তা দিলেন মেসি

১৫

আজ সারা দেশ কাঁদছে, মাদ্রাসার এতিম শিশুরাও দোয়া করছে : রিজভী 

১৬

নৈশপ্রহরীকে বেঁধে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি

১৭

বিপিএলে পাকিস্তানি তারকাদের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা

১৮

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

১৯

ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকার ব্যাগ ছিনতাই

২০
X