কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলার পর পালিয়ে যাওয়া বহুল আলোচিত কান্তা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মামুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ জুলাই) রাতে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বামনেরচর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রৌমারী থানার ওসি গোলাম মর্তুজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার মামুন মিয়া রৌমারীর সদর ইউনিয়নের বামনেরচর গ্রামের শাহিনুর রহমানের ছেলে।
রৌমারী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলার পর অনেক বন্দি পালিয়ে যান। ওই দিন হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মামুন মিয়াও কারাগার থেকে পালিয়ে যান। কারফিউয়ের মধ্যে ভ্যান, ইজিবাইক ও ট্রাকে চড়ে দুদিন পর তিনি রৌমারী পৌঁছান। পরে নিজ বাড়িতে আত্মগোপনে থাকেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাতে রৌমারী থানার এসআই তাজুল ইসলাম, জুয়েল, এএসআই জয়নালসহ পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত মামুনকে থানা হেফাজত থেকে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী কারাকর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ জানায়, মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে নরসিংদীর বেলাবোতে মার্জিয়া আক্তার কান্তা নামের এক নারীকে হত্যার অভিযোগে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। তিনি ওই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি নরসিংদী জেলা কারাগারে ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মার্জিয়া কান্তা ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার পার্লার ব্যবসায়ী ছিলেন। ২০১৯ সালে কান্তার স্বামী শহিদুল ইসলাম সাগর ও সাগরের ফুফাতো ভাই মামুন মিয়া মিলে কান্তাকে কুয়াকাটা নিয়ে যান। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে দুজন মিলে কান্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে পালিয়ে যান। ওই হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচারে আদালত প্রধান আসামি কান্তার স্বামী শহিদুল ইসলাম সাগরকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেন। অন্যদিকে তার প্রধান সহযোগী মামুন মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
রৌমারী থানার ওসি গোলাম মুর্তজা বলেন, জেলা কারাগার পলাতক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মামুনকে সোমবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন