‘আমার এতটুকু ছেলে কার কী ক্ষতি করেছিল? তাকে কেন মারল? কেন আমার বুক খালি করে দিল। আল্লাহ এর বিচার করুক।’ ক্ষণে ক্ষণে কেঁদে উঠছেন আর কথাগুলো বারবার বলছেন কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১৫ বছরের কিশোর সোহাগ মিয়ার মা জরিনা খাতুন।
পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহাগের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দায়। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে সোহাগ সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। সেখানে ঢাকার নয়াবাজার এলাকায় বসবাস করতেন তারা। সোহাগের বাবা মো. শাফায়েত রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাতেও অভাবের সংসারে ধরা দিচ্ছিল না সুখ। তাই কিছুদিনের জন্য বাবার পাশাপাশি রিকশা ভাড়ায় নিয়েছিল সোহাগ। গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজ আদায় করে আসরের পর রিকশা নিয়ে বের হয় সোহাগ। কিছুক্ষণ পর তার বাবা-মায়ের কাছে খবর আসে নয়াবাজার এলাকার গোলাগুলি চলছে। বাবা মো. শাফায়েত ছেলেকে খুঁজতে বের হয়ে শোনেন তার ছেলে হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে দেখতে পান গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছে সোহাগের নিথর দেহ।
নিহত সোহাগের বাবা মো. শাফায়েত মিয়া কালবেলাকে বলেন, ‘আমার ছেলে কার কী ক্ষতি করেছিল। তার মাথায় গুলি করা হয়েছে। আমার ছেলে আর ফিরবে না।’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সরকারের কাছে ছেলের মৃত্যুর বিচার দাবি জানান শাফায়েত মিয়া।
সোহাগের চাচা শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সোহাগের মাথায় একটা গুলি লেগেছে। ছেলেটা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না। যারা মেরেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, নিহতের পরিবারের খোঁজ নিয়েছি। সরকার থেকে যখন যা আসবে তা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।
মন্তব্য করুন