বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
এম এ মাসুদ, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আধুনিকতার কাছে ধরাশায়ী ‘ঠাটারি’ পেশা

পাতিল মেরামতের কাজ করছেন সুরুজ্জামাল। ছবি : কালবেলা
পাতিল মেরামতের কাজ করছেন সুরুজ্জামাল। ছবি : কালবেলা

বংশ পরম্পরায় বিভিন্ন তৈজসপত্রের ফুটো মেরামত করা ঠাটারিদের (তৈজসপত্র মেরামতকারী) পেশা। দাদার পর বাবা, আবার বাবার পর ছেলেরাও পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কয়েক দশক আগেও তাদের রুটি রোজগারের পথ ছিল সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত টিন ও এ্যালুমিনিয়ামের তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্রের ফুটো মেরামত করা।

কিন্তু এখন নতুন নতুন উপকরণে তৈরি আধুনিক ডিজাইনের তৈজসপত্রের ব্যবহারে ধরাশায়ী করেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ঠাটারিদের। ফলে জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে ঠাটারিদের।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ধুমাইটারি বটতলা গ্রামে বাস করত দুটি পরিবার। সেই পরিবারের দুই ভাই সুরুজ্জামাল ও মোজা। এখনো আঁকড়ে ধরে আছেন বাপ-দাদার সেই আদি পেশা।

জানা গেছে, পরিবারের ঠাট বজায় রাখার বিভিন্ন তৈজসপত্র মেরামত করেন বলে এদের ঠাটারি বলা হয়। আশির দশকের দিকেও প্রাচীন উপকরণ মাটি দিয়ে তৈরি থালার ব্যবহার দেখা যেত গ্রামগঞ্জে। পাশাপাশি অবস্থা সম্পন্ন পরিবারগুলোতে দেখা যেত টিন, কাঁসা, পিতল ও চীনা মাটির থালার ব্যবহার। তা ছাড়া বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতো এ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, জগ, বদনা, কেটলি, টিনের বালতি ও মুড়ি রাখার টিন।

ব্যবহৃত এসব তৈজসপত্র নানা কারণে হয়ে যেত ফুটো কিংবা হাতল ভাঙা। হাঁড়ি-পাতিলের ভেঙে যেত ওপরের কান্টা। এসব সারাতে কালো চামড়ার তৈরি হাপর, পিচ এবং ভাঙা টিন ও সিলভারের টুকরা কাঁধে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে হাঁক ছাড়তেন ঠাটারিরা। তাদের ডাক শুনে বাড়ি থেকে বের হতেন গৃহিণীরা। মেরামত করে নিতেন ভেঙে যাওয়া সব জিনিসপত্র।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ছন্দপতন ঘটে ঠাটারিদের জীবন-জীবিকায়। তিন যুগ আগেও যেখানে কদর ছিল ঠাটারিদের। সেখানে আধুনিকতার কাছে এখন ধরাশায়ী হয়েছেন তারা। টান পড়েছে তাদের জীবিকায়।

৫০ বছর ধরে ঠাটারির কাজ করা সুরুজ্জামাল বলেন, এখন আর সেই রকম আয় নেই। এখন আর কেউ এগুলো ভালো করে না। গ্রামে গ্রামে ঘুরেও আয় হয় এক থেকে দেড়শো টাকা। হাটে আসলেও কাজ না থাকায় বসে থাকতে হয়। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ছেড়ে দিতে হবে বাপ-দাদার এ পেশা।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) গাইবান্ধার সহকারী মহাব্যবস্থাপক রবীন্দ্র চন্দ্র রায় কালবেলাকে বলেন, যদি এ পেশা ছেড়ে কেউ অন্য পেশায় যেতে চায় তাহলে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সার্জেন্ট হেলালের সাহসিকতায় ২ ছিনতাইকারী আটক

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ‘মহান মে দিবস’ আজ

নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, প্রশাসনের সতর্কতা

রাজধানী থেকে পুরনো যানবাহন সরাতে অ্যাকশনে নামছে বিআরটিএ

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনওকে বদলি

ববি প্রশাসনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা

স্কুলের ১৮টি গাছ কাটলেন প্রধান শিক্ষক

শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়েতে কুকুর, ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে চিঠি

আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে কুপিয়ে হত্যা

বাবরি মসজিদ বানাবেন পাকিস্তানি সেনারা : পাকিস্তানের সিনেটর

১০

কাশ্মীর হামলার পর চাপে ভারতের মুসলিমরা, বেড়েছে দমনপীড়ন

১১

ছাত্রদের ক্ষমতায় এনে দেশের ক্ষতি করা হয়েছে : সোহেল

১২

সন্ধ্যা নদীতে বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৩

মে মাসে হতে পারে ২টি ঘূর্ণিঝড়

১৪

শ্রমিক সমাবেশে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান

১৫

ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা ইসরায়েলে

১৬

গ্রাহকদের জন্য বাড়তি সুবিধা আনল বাংলালিংক

১৭

জয়ের পরও শান্তর মুখে হতাশা

১৮

রাজশাহী মাউশি কার্যালয়ে দুদকের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

১৯

জিআই স্বীকৃতি পেল নরসিংদীর লটকন

২০
X