কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। ভারতের সম্ভাব্য আগ্রাসনের শঙ্কায় নিজেদের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণ জোরদার করেছে পাকিস্তান। দেশটির বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সব ধরনের উড়োজাহাজের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম এক্সপ্রেস নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে বুধবার গিলগিট ও স্কারদু থেকে সব বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সূত্র উদ্বৃত করে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে ভারতের দিক থেকে আসা বা ভারতীয় এয়ারলাইনের যেসব ফ্লাইট পাকিস্তানি আকাশসীমা দিয়ে উড়ে যাচ্ছে সেগুলোর ওপর। যে কোনো সন্দেহজনক উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে এখন উচ্চপর্যায়ের অনুমোদন ছাড়া আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায় পাকিস্তান এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটির সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি নজরদারি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
ইসলামাবাদ বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় আকাশসীমা দিয়ে আসা বা সেখান থেকে যাত্রা শুরু করা আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর গতিবিধিও এখন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদিও পাকিস্তানে ভারতীয় এয়ারলাইনের ফ্লাইট এখনও নিষিদ্ধ, তবে অন্যান্য আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ চলাচলের ওপরও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বড় বড় সব বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোনো সন্দেহজনক উড়োজাহাজ ছাড়ার আগে পাইলটদের কাছ থেকে ‘এয়ার ডিফেন্স ক্লিয়ারেন্স নম্বর’ চাওয়া হচ্ছে। যথাযথ নথিপত্র ও পরিচয় ছাড়া কোনো উড়োজাহাজকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না।
এছাড়া, বিমানবন্দরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বৈধ পরিচয়পত্র সব সময় সঙ্গে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের কাছে পরিচয়পত্র নেই, তাদের বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
বিমানবন্দর নিরাপত্তা বাহিনী (এএসএফ), পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করা হয়েছে, যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এই পদক্ষেপগুলো মূলত পূর্ব সতর্কতা হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, অঞ্চলজুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে আকাশসীমা সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন