মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জ ৩টি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হচ্ছে। আজিমনগর ইউনিয়নের হাতিঘাটা এলাকা থেকে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে গত সপ্তাহে লেছড়াগঞ্জের লটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে আবার নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ।
জানা গেছে, প্রায় ৫০ দশক থেকে অনবদ্য পদ্মার ভাঙনে এ উপজেলার আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জ ৩টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণরূপে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ৭০ দশকের শেষের দিকে চর জেগে উঠলে ৩টি ইউনিয়নে আবার জনবসতি শুরু হয়। বর্তমানে চরাঞ্চলের ৩টি ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হাজারেরও অধিক মানুষের বসবাস। তবে এখনো ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে বসবাস করছেন চরাঞ্চলের জনগণ।
চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে প্রবল স্রোত আর ঢেউয়ের আঘাতে আজিমনগরের হাতিঘাটা এলাকা থেকে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর পর্যন্ত ভাঙন দেখা দেয়। যা বর্তমানে তীব্র আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, হাতিঘাটা এলাকায় অনেক জায়গায় জিও ব্যাগ থাকলেও তা ধসে নদীর তীরের মাটি বের হয়ে এসেছে। নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছে এ এলাকার শতশত পরিবার। এ ছাড়া ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে সুয়াখাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, হাতিঘাটা বাজার, বসতভিটাসহ শত শত বিঘা ফসলি জমি।
আজিমনগর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দীন বলেন, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যা এখনো অব্যাহত আছে। কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ফেললেও ধসে যাচ্ছে। একের পর এক কৃষি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এভাবে ভাঙলে চরাঞ্চলে টিকে থাকা কষ্টকর।
লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোতালেব হোসেন বলেন, নদীতে পানির তীব্র স্রোতে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৬ কিলোমিটার এরিয়া নিয়ে চরাঞ্চলের ফসলি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। চলতি বর্ষায় প্রায় ১ কিলোমিটারের অধিক জমিজমা নদীতে চলে গেছে। আমার ওয়ার্ডের অনেকের ভিটেবাড়ি ও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও নদীতে চলে গেছে। এভাবে ভাঙলে হয়তো চরই থাকবে না। অনেক কৃষক জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চরাঞ্চলে আমরা গত তিন বছরে কয়েকটি এলাকায় জিওব্যাগ ফেলেছি। আবারও আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই হয়তো কাজ শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন