হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আমার গুলিবিদ্ধ স্বামীর চিকিৎসা করাব কী করে’

বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ জরিফুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা
বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ জরিফুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা

সংসারে স্ত্রীর ভরণপোষণ ও দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ঢাকায় যান জরিফুল ইসলাম। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় মুরগির মাংসের ব্যবসা করতেন তিনি। জরিফুল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার সংসার ভালোই চলছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচিতে গিয়ে মাংস ব্যবসায়ী জরিফুল ইসলাম (২৮) পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন।

আন্দোলনে গিয়ে জরিফুলের বাম পায়ে পরপর দুটি গুলি লাগে। পরে সে গুলি বের করা হলেও হাড় ভেঙে যাওয়ায় হাঁটতে পারছেন না জরিফুল। পঙ্গু হওয়ার উপক্রম। অর্থভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না তার পরিবার। চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসাও করতে পারছেন না তিনি।

জরিফুল ইসলাম পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আয়-রোজগার না থাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি গ্রামের আব্দুর সাত্তারের ছেলে জরিফুল ইসলাম। তিনি ঢাকার সাভারে একটি দোকানে মুরগির মাংস বিক্রি করতেন।

জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সাভারে ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন জরিফুল। দিনব্যাপী পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় জরিফুলের বাম পায়ে একটি গুলি লাগে। অন্য ছাত্ররা তাকে উদ্ধার করার সময় বাম পায়ে আরও একটি গুলি লাগে।

পরে ছাত্ররা উদ্ধার করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন মেডিকেলে নিয়ে গেলেও ছাত্রলীগ ও পুলিশের বাধায় চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। এ সময় দূরের একটি হাসপাতালে অপারেশন করে পা থেকে তার গুলি বের করা হয়। পরে জানতে পারেন তার পায়ের দুটি হাড় ভেঙে গেছে। এরপর গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা নেন।

জরিফুল ইসলামের স্ত্রী রেজিনা বেগম বলেন, স্বামীর রোজগারের টাকায় সংসার চলত। এখন আমার স্বামী পঙ্গু হয়ে বাড়িতেই পড়ে আছেন। ধারদেনা করে সংসার চলছে। স্বামীর চিকিৎসা করাব কী করে? কেউ কি নেই আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। সন্তান দুটিকে মানুষ করব কীভাবে?

জরিফুল ইসলাম বলেন, সেদিন সাভার এলাকায় ছাত্রদের আন্দোলনে যোগ দিই। ছাত্রদের পানি থেকে শুরু করে সবকিছুই সরবরাহ করি। এ সময় আমার বাম পায়ে পরপর দুটি গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পঙ্গুত্ববরণ করে বাড়িতেই পড়ে আছি।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ১ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এত টাকা আমি কই পাই? আমার চিকিৎসা, সংসারইবা চলবে কী করে? সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চাই। যারা আমাকে গুলি করেছে তাদেরও বিচার চাই।

বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান আবেদ আলী বলেন, ঢাকায় আন্দোলনের সময় জরিফুলের পায়ে গুলি লাগে। তিনি অত্যন্ত গরিব। বিত্তবানদের উচিত তার পাশে দাঁড়ানো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা সংস্কার আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিসরে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পেলেন ট্রাম্প

নেইমারের জন্য এখনও দরজা খোলা রেখেছেন আনচেলত্তি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষ ও প্রফেশনাল কোর্সের সব পরীক্ষা স্থগিত

ইতিহাস গড়ে ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট পেল কেপ ভার্দে

পলিথিনে মোড়ানো শপিং ব্যাগে মিলল নবজাতকের মরদেহ

রোমে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক

কলাবাগানে ডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার

অবশেষে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে গাজা শান্তিচুক্তি সই

জয়পুরহাট জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কের পদত্যাগ

শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান

১০

‘ড. তোফায়েলের শূন্যতা বহু দশক অনুভূত হবে’

১১

আওয়ামী লীগ নেত্রী কেকার মরদেহ উদ্ধার

১২

স্থানীয় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

১৩

পূজা পরিষদ ও মহানগর কমিটির প্রত্যাশা / সংকট সমাধানে এক হয়ে কাজ করার নজির অব্যাহত থাকুক

১৪

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে : পিএনপি

১৫

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় প্রোটিয়াদের কাছে বাংলাদেশের হার

১৬

নিষিদ্ধ হওয়া ভিডিও নির্মাতাদের সুখবর দিল ইউটিউব

১৭

জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে জামায়াতের অংশগ্রহণ

১৮

‘ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াও আমাদের দিনে দাঁড়াতে পারবে না’ 

১৯

রিপন মিয়াকে প্রাণনাশের হুমকি

২০
X