চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঘরে বাজার নেই, মসজিদ থেকে পাওয়া খিচুড়ি খেয়েই দিন পার

তাহাজ্জেল হোসেন ও তার শিশুপুত্র জিহাদ। ছবি : কালবেলা
তাহাজ্জেল হোসেন ও তার শিশুপুত্র জিহাদ। ছবি : কালবেলা

ঘরে একমুঠো চাল নেই, নেই নগদ টাকাও, তাই রান্না হয়নি। মসজিদ থেকে পাওয়া খিচুড়ি খেয়েই দিন পার করেছে শিশু জিহাদসহ তার বৃদ্ধ অসুস্থ বাবা তাহাজ্জেল হোসেন ও মা হাফিজা খাতুন। হাফিজা খাতুন দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। তিনি স্যালাইন পানি খেয়েই দিন পার করছেন।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কাঁদতে কাঁদতে এই কথা জানান বৃদ্ধ অসুস্থ তাহাজ্জেল হোসেন।

এর আগে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় যাত্রীবেশে শিশু জিহাদের ভ্যানটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতকারী। ঋণের টাকায় কেনা উপার্জনের একমাত্র সম্বল ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি।

বাবা অ্যাজমা রোগী হওয়ায় ১২ বছর বয়সী শিশু জিহাদের উপার্জনেই চলত পরিবারটি। একদিন ভ্যান না চালালে খাবার জোটে না। ভ্যান চুরির পর থেকে বাড়িতে রান্নাবান্না হয়নি বলে জানা গেছে।

বৃদ্ধ তাহাজ্জেল মিয়া কালবেলাকে বলেন, ঘরে রান্নার জন্য কিছুই নেই আমার। নেই কোনো নগদ টাকাও। শুক্রবার বাড়িতে কোনো রান্না হয়নি। জুমার নামাজের পর মসজিদ থেকে এক থালা খিচুড়ি দিয়েছিল। সেটা বাবা-ছেলে খেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কেউ কোনো খোঁজও নেইনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের দীননাথপুর গ্রামের পোস্ট অফিস পাড়ায় শিশু জিহাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, মা হাফিজা খাতুন অসুস্থ হয়ে বিছানায়। বিভিন্ন রোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। বাবা তাহাজ্জেল মিয়ারও বয়স হয়েছে। অ্যাজমা রোগী, আর ভ্যান চালাতে পারেন না তিনি। একটি এনজিও থেকে আট মাস আগে ৫০ হাজার টাকা লোন তুলে জিহাদকে ভ্যান কিনে দিয়েছিলেন। ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন হত তা দিয়ে টেনেটুনে চলত সংসার।

হাফিজা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায়। কিছুই খেতে পারেন না। স্যালাইন পানি পান করেই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন। তার চিকিৎসার জন্য ওষুধ লাগে। ঘরে এখন চাল কেনারও টাকা নেই বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ তাহাজ্জেল।

তিনি বলেন, আমার ছেলে স্থানীয় বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। এরপর সে আর পড়েনি। এখন আমার এই ছেলেটাই সম্বল। সে আমাদের দেখাশোনা করে। যাত্রীবেশে ছেলের কাছ থেকে ভ্যান নিয়ে গেছে। এনজিও থেকে লোন তুলে ভ্যান কিনে দিয়েছিলাম। ভ্যানটি চুরি করে নিয়ে গেছে। এখন লোনের টাকা পরিশোধ করব কীভাবে।

প্রসঙ্গত, বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চুয়াডাঙ্গার সদর হাসপাতাল থেকে একজন যাত্রী শিশু জিহাদের ভ্যানে উঠে শহরের বড়বাজারে নিয়ে যেতে বলেন। সেখান থেকে দরদাম করে আলমডাঙ্গাতে নিয়ে যায়।

আলমডাঙ্গা স্টেশন সংলগ্ন স্থানে গেলে শিশু জিহাদকে পাশের দোকান থেকে একটি বস্তা নিয়ে আসতে বলে ওই যাত্রী। ফিরে এসে জিহাদ দেখে তার ভ্যান নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট আর জয়, মিরাজের ধন্যবাদ পেলেন যারা

সূর্যের তাপে পুড়ছে পাকিস্তান

রাজনৈতিক মতৈক্যে করিডরের সিদ্ধান্ত নিন, সরকারকে সমমনা জোট

ঈদের আগেই বাজারে আসছে নতুন নোট, যা থাকছে নকশায়

মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে ঢাবি অ্যালামনাই

পদোন্নতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচি

সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া সেই অধ্যক্ষকে কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে অব্যাহতি

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া করিডর নয় : শেখ বাবলু

ইবিতে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের নিন্দা

ইসরায়েলি গুপ্তচর সন্দেহে ইরানে এক জনের ফাঁসি কার্যকর

১০

তীব্র তাপদাহের সঙ্গে মে মাসে কালবৈশাখী-ঘূর্ণিঝড়ের আভাস

১১

ফ্যাসিস্ট আমলে হাজার হাজার শ্রমিককে পথে বসানো হয়েছে : রিজভী

১২

সীমান্তের বাসিন্দাদের যুদ্ধকালীন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভারত

১৩

খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের থানা ঘেরাও

১৪

ইয়েমেনের হামলায় যুদ্ধবিমান হারিয়ে পিছু হটল মার্কিন রণতরী

১৫

বাড়িতে ছাদবাগান থাকলে মিলবে ৫ শতাংশ ট্যাক্স রেয়াত

১৬

সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ এবি পার্টির নেতার বিরুদ্ধে

১৭

সারজিসের উপস্থিতিতে এনসিপির সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

১৮

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাস পেলেন বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা

১৯

সিকদার গ্রুপের ২০৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ 

২০
X