দেশেকে অস্থিতিশীল করে শেখ হাসিনাকে প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় যশোরে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার দোসর শাস্তির দাবি এবং সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ৫ আগস্ট পর আওয়ামী লীগের অনেকে পালিয়ে গেলেও অনেক নেতাকর্মী ঘাপটি মেরে আছে। এদের কাছে অনেক কালো টাকা। শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসন আমলে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়েছেন ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। টাকা পাচার হয়েছে ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা দিয়ে কিছু উন্নয়ন করলেও তার মধ্যে থেকেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লুট করেছে। সেই কালো টাকা ছড়িয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী দোসররা।
দাকোপে মন্দিরে উড়োচিঠি প্রসঙ্গ টেনে রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে হিন্দুদের পূজায় অংশ নেয়। পূজাতে গিয়ে খেলনা ক্রয় করে। সব ভেদাভেদ ভুলে আরতিতে অংশ নেয়। এই সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এই সম্প্রতি ভাঙছেন শেখ হাসিনা। ভারতে বসে ভারতকে উসকে দিচ্ছেন তিনি। পাকিস্তান আমল থেকে বিএনপির আমল পর্যন্ত হিন্দুদের ওপর হামলা, ভাঙচুর, নির্যাতন হয়নি। তাহলে এখন কেন হচ্ছে! শেখ হাসিনার ইন্ধনে এই অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে। এই চক্রান্ত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ ও তার প্রভুদের যৌথ প্রযোজনা।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ছিল শেখ হাসিনার জল্লাদখানা, কসাইখানা। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার পছন্দমতো ব্যক্তিকে বিচারপতি বানিয়ে এই কসাইখানা থেকে ইচ্ছামতো সাজা দেওয়া হয়েছে। এই কসাইখানা ও পুলিশ প্রশাসনে এখনো আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা রয়েছে। তারা এখনো কাজ করছে না। একসময়ে রাতের আঁধারে পুলিশ কত অন্যায় করেছে। তাদের (আওয়ামী লীগ) নির্দেশে রাতের আঁধারে কত নেতাকর্মীদের ধরে এনেছে। এখন আপনারা (পুলিশ) ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলেছে।
ভারত প্রসঙ্গে টেনে তিনি আরও বলেন, ভারতের কাছে কোহিনূর ছিল শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতিতে যেন ভারতের মনবেদনা থামছেই না। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে যা হচ্ছে, সেটা ভিন্ন কিছু। এ অস্থিশীলতার পেছনে বিদেশিদের হাত আছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ভোটবিহীন নির্বাচনে কোনো জনপ্রতিনিধিকে দেশের মানুষকে দেখতে চায় না। ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারদের এখনো ক্ষমতায় রেখেছেন কেন। তারই তো ফ্যাসিবাদের বড় দোসর, এলাকার সন্ত্রাসী গুণ্ডাপাণ্ডা।
যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সঞ্চালনা করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সল। সমাবেশের আগে দুপুর থেকে জেলার ৮ উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ওয়ার্ড থেকে মিছিলসহকারে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন