বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বরিশালে টানা তিন দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিশেষ করে রোববার রাত থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে অতিভারি বর্ষণে বিপর্যয় নেমে এসেছে জনজীবনে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর বেশিরভাগ সড়ক। নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কে জমে থাকা পানি নামতে পারছে না। ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ‘চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এ সময় অর্থাৎ রোববার বিকেল ৩টা থেকে সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৪১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন : ভারি বৃষ্টিপাত কবে কমবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
চলমান অতিভারি বর্ষণ আরও ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানিয়েছেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল।
তিনি বলেন, ‘উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় আছে। এ কারণে গভীর সাগরে মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য চলতি মাসের ১ তারিখ থেকেই বরিশালে হালকা থেকে মাঝারি আবার কখনো ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে গত দুদিন ধরে বরিশালের সর্বত্র অতিভারি বর্ষণ হচ্ছে।
বরিশালের কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অতিভারি বর্ষণ ও ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। এজন্য পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর এবং সব নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে সোমবার বিকেলে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ‘অতিভারি বর্ষণের কারণে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডে কাকলীর মোড় থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে হাঁটু সমান জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ছাড়া নগরীর নিম্নাঞ্চল পলাশপুর ও রসুলপুরের অসংখ্য বাড়িঘর জোয়ার এবং বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে আছে। রূপাতলী, কাজিপাড়া, নবগ্রাম রোড, কালীবাড়ি রোড, বগুড়া রোড, বান্দ রোডের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনটি আবাসিক কলোনি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপাদা এবং বিআইপি কলোনি, পার্শ্ববর্তী বঙ্গবন্ধু কলোনিসহ অন্যান্য এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন জানান, ‘অতিভারি বর্ষণের কারণে সর্বত্রই পানি জমেছে। তা ছাড়া নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে স্থলভাগে জমে থাকা পানি নামতে পারছে না।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভারি বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধির কারণে বরিশালের কোথাও কোনো শহররক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিনা- তার খোঁজখবর নিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন