শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিশু মুনতাহা হত্যায় চার আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে

সিলেট শিশু মুনতাহা হত্যায় গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে। ছবি : কালবেলা
সিলেট শিশু মুনতাহা হত্যায় গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে। ছবি : কালবেলা

সিলেটের কানাইঘাটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৫) হত্যায় মামলায় গৃহ শিক্ষিকাসহ (সাবেক) চার জনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি এ হত্যার সঙ্গে আরও কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখতে আদালতে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বাদী পক্ষের আইনজীবীরা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী মো. আবু জাহের বাদল ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ শনিবার (৯ নভেম্বর) কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরণ মামলা করেন। এরপর থেকেই পুলিশ সন্দেহভাজনদের ওপর নজরদারি বাড়ায়।

আটক ব্যক্তিদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নিহত মুনতাহা কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।

গ্রেপ্তার হওয়ারা হলেন কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত ময়না মিয়া আলিফজান (৫৫) ও তার মেয়ে শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫), একই এলাকায় ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগম (৩৫)।

কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রফিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের মাধ্যমে ঘটনার পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। আরও কয়েকজনের নাম এসেছে, যাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মাটিতে পুঁতে ফেলা লাশ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে গৃহশিক্ষিকার মাকে আটক করেন স্থানীয়রা। এ সময় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় মুনতাহার লাশ দেখতে পান স্বজনরা।

মুনতাহা আক্তার জেরিন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। গ্রেপ্তার তিনজনই মুনতাহার প্রতিবেশী।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে থানায় নেয় পুলিশ। এ সময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে মার্জিয়ার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধানে তল্লাশি চালান স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে তল্লাশি চালানোর একপর্যায়ে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। এ সময় তাকে আটকাতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা কাদামাটি মাখা মুনতাহার লাশ দেখতে পান। পরে মার্জিয়ার মাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।

কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, মুনতাহার নিখোঁজের পর থেকে পুলিশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছিল। কিন্তু কোনো ক্লু পাচ্ছিল না। শনিবার স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্যকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কি না খোঁজ নিতে বলেন।

তিনি বলেন, মুনতাহার স্বজনসহ স্থানীয়রা রোববার রাতভর মাটিখোঁড়া কোনো জায়গা আছে কি না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগ মুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার লাশ দেখতে পান। আটকের পর তিনি জানান, লাশ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। রাতে সেখান থেকে মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলতে চেয়েছিলেন তিনি।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশী। একসময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানি। মুনতাহাকে বাড়িতে পড়াতেন মার্জিয়া। মার্জিয়াকে তার স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন মার্জিয়া। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। সম্প্রতি মার্জিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল বলে জানতে পেরেছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডয়চে ভেলের সংবাদ নিয়ে জুলাই রেভ্যুলেশনারী এলায়েন্সের প্রতিবাদ

‘গণঅভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মানূষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বিএনপি কাজ করবে’

বিএনপিই একমাত্র শ্রমজীবী বান্ধব দল : রোকনুজ্জামান তালুকদার

বিশিষ্টজনের মত / পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত দেখতে চায় জনগণ

মে দিবসে ছাগল উপহার পেল শতাধিক পরিবার

টাঙ্গাইলের জামুর্কীর সন্দেশ পেল জিআই স্বীকৃতি

বরিশালের আমড়া পেল জিআই স্বীকৃতি

৫ মে থেকে আইফোনের যেসব মডেলে চলবে না হোয়াটসঅ্যাপ

নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা জনগণ মানবে না : টুকু

আঘাতে অসুস্থ বন্য হাতি, চিকিৎসা দিল বন বিভাগ

১০

খাবার চুরি, বি‌য়ে না করেই ফি‌রে যা‌চ্ছিলেন বর

১১

ঢাকাসহ যেসব এলাকায় বজ্রপাত হতে পারে শুক্রবার

১২

নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে ক্ষমা করবে না জনগণ : খসরু

১৩

কাশ্মীর ইস্যুতে সুর বদল যুক্তরাষ্ট্রের

১৪

ফিজিতে ‘দুর্দশায়’ ২৬ বাংলাদেশি, পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী

১৫

তিস্তা চরের নারী শ্রমিকদের মেলে না ন্যায্য মজুরি!

১৬

মে দিবসে ছিন্নমূল মানুষের পাশে ঢাবি ছাত্রদল

১৭

টানা তিন ম্যাচে একাদশের বাইরে রিশাদ, লাহোর কি ভুল পথে হাঁটছে?

১৮

ভুল তথ্য প্রচারে ব্যবহার হচ্ছে এআই

১৯

বিপিএসএ সভাপতি নাজমুল, সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান

২০
X