নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

২০০ টাকায় মিলল নতুন বই, প্রধান শিক্ষক বললেন ব্যয় হবে উন্নয়নকাজে

বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইনসেটে প্রধান শিক্ষক লিলি পারভিন। ছবি : কালবেলা
বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইনসেটে প্রধান শিক্ষক লিলি পারভিন। ছবি : কালবেলা

বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যের নতুন বই নিতে বিদ্যালয়ে গিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। বই হাতে পেয়ে সহপাঠীরা মিলে আনন্দ উদযাপন করবে, সে জন্য পরেছে নতুন পোশাকও। কিন্তু ২০০ করে টাকা দিয়ে নতুন বই নিতে হয়েছে অনেককে। আর যারা টাকা দিতে পারেনি, তারা বঞ্চিত হয়ে খালি হাতে ফিরে গেছে বাড়িতে।

এমন ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিলি পারভিন ৩৬ জন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন বই বিতরণের সময় ২০০ টাকা করে মোট সাত হাজার ২০০ টাকা নিয়েছেন। আর টাকা না দেওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী এখনো নতুন বই পায়নি।

তবে প্রধান শিক্ষকের দাবি, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হয়েছে, এটি স্কুলের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হবে। পরে তাদের নতুন বই দেওয়া হয়েছে। বইয়ের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এ ঘটনার প্রতীকার চেয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হয়েছেন এলাকাবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি বই দেওয়ার নামে ৩৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানায়, প্রধান শিক্ষক ২০০ টাকা করে নিয়ে নতুন বই দিয়েছেন। কোনো রশিদ দেননি। কিন্তু তারা টাকা না দেওয়ায় তাদের বই দেওয়া হয়নি।

বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, সারা দেশের শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারি নতুন বই পেয়ে আনন্দ করেছে। অন্যদিকে বিষ্ণুপুর সরকারি বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী এ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকার বিনা মূল্যে বই দিচ্ছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক লিলি বেগম টাকা ছাড়া বই দিচ্ছেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক লিলি পারভিন বলেন, ৩৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। নতুন বইয়ের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। বই উৎসব পালন করেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই দিয়েছি। তা ছাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে এই টাকা নেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের আরও দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলে, বই দেওয়ার দিন ম্যাডাম ২০০ টাকা নিয়ে আসতে বলছিলেন। তাই ২০০ টাকা দিয়ে বই নিয়ে গেছি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের বই দিচ্ছে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে। সরকারি বই বিতরণ নীতিমালা অনুযায়ী বিতরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো রকম অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছি তদন্ত করার জন্য। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কলেজছাত্রের

১০ জুলাই : আজকের নামাজের সময়সূচি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

ইলন মাস্কের এক্সের প্রধান নির্বাহীর পদত্যাগ

সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যে বাঁক নিচ্ছে : সাইফুল হক

আগামী নির্বাচনে ড্যাব নেতাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের ঘোষণা 

তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা ভোটিং বুথ থাকতে পারে : প্রেস সচিব

নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হবে : আমিনুল হক 

চট্টগ্রামে বন্যা ঝুঁকি নেই, যথাসময়ে এইচএসসি পরীক্ষা

ভোটের দিন ইন্টারনেট সচল রাখতে করণীয় নির্ধারণের নির্দেশ

১০

চারটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের অভিযান

১১

বিজিবির মানবিক সহায়তা / ফেনীতে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ

১২

ক্যান্সার আক্রান্ত ফাহিমার পাশে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

১৩

শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে ছাত্রদল নেতা

১৪

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রভাবশালী দুই উপসচিবকে স্ট্যান্ড রিলিজ

১৫

রাষ্ট্রপতির কাছে সৌদি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ  

১৬

সাত মাসে বাংলাদেশ ৪০ কোটি ডলারের চীনা বিনিয়োগ পেয়েছে : রাষ্ট্রদূত

১৭

বন্যার কারণে ৩ বোর্ডের এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা স্থগিত

১৮

রেস্তোরাঁ থেকে ইসরায়েলিদের তাড়িয়ে দিলেন ম্যানেজার

১৯

অনুশীলনের জন্য দরকার হলে রিহার্সাল নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা

২০
X