ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রসূতির ভুল অস্ত্রোপচারের অভিযোগ উঠেছে। অবস্থার অবনতি হলে ১০ ঘণ্টা পর ওই নারীকে সরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ওই নারীর নাম ফাহিমা বেগম (৩০)। তিনি ভাঙ্গা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিনমজুর হবি শেখের স্ত্রী।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) ভোরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। আজই তাকে স্বামীর বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্বামী হবি শেখ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেসরকারি হাসপাতাল ‘দেশ ক্লিনিক’-এ আমার স্ত্রীকে নিয়ে যাই। হাসপাতালটি থানা রোডের পাশেই অবস্থিত। চিকিৎসক জানান, সিজার (অস্ত্রোপচার) হবে ৮টা ৪৫ মিনিটে। সিজার করার পর ১০ মিনিটের মধ্যে নবজাতক ছেলেসন্তান ও স্ত্রীকে কেবিনে দিয়ে দেন। শেষ রাত থেকেই স্ত্রীর খিঁচুনি ওঠে। অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ফরিদপুরে নিতে বলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফরিদপুরে নেওয়ার পথে আমার স্ত্রী মারা যান। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মীমাংসা করতে ছোট ভাইয়ের ওপর দায়িত্ব দিয়েছি। নবজাতক ভালো আছে।’
প্রসূতির ভাই আকাশ বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ফরিদপুরে। আমার বোনকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মারা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে দেশ ক্লিনিকের মালিকপক্ষের একজন মামুন চোকদার বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে সিজার হয়েছে কিন্তু মারা গেছে ফরিদপুর হাসপাতালে। আমাদের সিজার ভালোভাবেই হয়েছিল। পরে অসুস্থ হলে ফরিদপুর নিয়ে গেলে সেখানেই তিনি মারা যান। প্রতিপক্ষরা আমাদের বিরুদ্ধে দোষ চাপাচ্ছে।’
তবে কোন চিকিৎসক প্রসূতির অস্ত্রোপচারে জড়িত ছিলেন তা জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাব দেননি।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিত বলেন, ‘ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর এমন একটি অভিযোগ শুনেছি। তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। প্রমাণ পেলে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘দেশ ক্লিনিকে একটি সিজার হওয়ার পর প্রসূতি মারা গেছেন বলে শুনেছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন