ডিউটিরত অবস্থায় গুপ্ত হামলার শিকার হয়ে নরসিংদী সদর থানার ডিউটি অফিসার আদনান রহমান গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাত পোনে ১টার দিকে নরসিংদী সদর থানার সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে ১৬ আগস্ট একই থানার আবদুল্লাহ নামে পুলিশের এক অপারেটরকে লক্ষ্য করে হামলা করে। এতে ওই পুলিশের সদস্যের মাথা ফেটে যায়।
এদিকে এই ঘটনার দুদিন পার হলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি। জানা গেছে, আহত পুলিশ সদস্য আদনান ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার বীরখারুয়া গ্রামের এটিএম খলিলুর রহমানের ছেলে।
সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, থানার পাশেই এক বাসায় এসআই আদনান স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে থানায় ডিউটি অফিসারের দয়িত্ব পালনকালে কাজের ফাঁকে রাতের খাবার খেতে সাড়ে ১২টার দিকে বাসায় যান। খাবার খেয়ে থানায় ফেরার পথে থানার সামনে ঈদগাহের কোনায় আসা মাত্রই আগে থেকে ওত পেতে থাকা হামলাকারী পেছন দিক থেকে কাঠ বা বাঁশ দিয়ে আদনানের মাথায় ওপর উপর্যুপরি কয়েকটি আঘাত করে। এ সময় তার মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার শুরু করতে থাকে। তখন হামলাকারী দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে রক্তাক্ত মাথা চেপে ধরে নিজেই থানার ভেতরে এসে পরে যান আদনান। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে রাতেই এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।
নিউরো সার্জন আমিনুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে ওই হাসপাতালের আইসিসিইউতে চিকিৎসাধীন। শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন, এভারকেয়ারে তার সঙ্গে থাকা সহকর্মী এসআই মাসুদ ও ভগ্নিপতি হানিফ খান।
আহতের স্বজনরা জানায়, আদনান মাত্র ৭ মাস আগে ফরিদপুরের মেয়ে চৈতিকে বিয়ে করেছেন। স্বামীর এ অবস্থায় চৈতি একেবারে ভেঙে পড়েছেন।
ভগ্নিপতি ফারুক জানান, হাসপাতালের সব ব্যয়ভার নরসিংদী জেলা পুলিশ বহন করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার দুই সহকর্মী বলেন, ঘটনার সময় একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীকে শনাক্ত করা হলেও তাকে আটক করা যায়নি। হামলাকারীর নাম সাইফুল ইসলাম। তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার আলোকবালি গ্রামে। সেখানে তার থাকার জন্য কোনো ঘর নেই। তিনি একজন মাদকসেবনকারী ও মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে।
নরসিংদী সদর থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছি।
তিনি আরও বলেন, কেন এই ঘটনা ঘটল বিষয়টি জানার জন্য তদন্ত চলছে। হামলাকারীকে আটকের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
মন্তব্য করুন