ফরিদপুরে জোর করে মায়ের কোল থেকে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া আট মাসের সেই শিশু তানহা আক্তারকে মা পপি বেগমের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১২ মে) ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বির আদালত এ আদেশ দেন।
এ ছাড়া আদালত পরবর্তী শুনানি (২ জুন) পর্যন্ত শিশুটি মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। শিশুটিকে মায়ের কোলে তুলে দেওয়ার মুহূর্তে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা পপি বেগম। একই সঙ্গে কাঁদতে থাকেন শিশুর পালক মা-বাবাও। মুহূর্তেই সেখানে সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক পরিবেশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, পপি বেগম দীর্ঘদিন ধরে সন্তান ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করে আসছেন। অবশেষে আদালতের নির্দেশে র্যাব তাকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচারের আশায় আছি।
সন্তানকে ফিরে পেয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে পপি বেগম বলেন, আমার কলিজার টুকরাকে আবার পেয়েছি। সাংবাদিকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আশা করি, এখন থেকে আর হয়রানির শিকার হব না।
রোববার (১১ মে) সন্ধ্যায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব নগরকান্দায় হস্তান্তর করে। পরে আদালতের আদেশ অনুযায়ী শিশুটিকে হাজির করা হয়।
এর আগে ভুক্তভোগী পপি বেগম অভিযোগ করে বলেন, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে আমার বাড়ি। তিন বছর আগে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। এ সময় কোলজুড়ে আসে একটি কন্যাসন্তান। কিন্তু সুখ বেশিদিন টিকেনি। পাঁচ মাস আগে কলহের জেরে মৌখিকভাবে তালাক দেন কাইয়ুম।
তিনি আরও বলেন, তালাকের সময় আট মাস বয়সী কন্যাশিশু তানহাকে জোর করে রেখে দেন তিনি। কিছুদিন পর জানতে পারি, আমার সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে দেড় লাখ টাকায়। শিশুটি বিক্রি করা হয় একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কোহিনুর বেগমের কাছে। আর এ বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দা উপজেলার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার। পরে তানহাকে আনতে গেলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কন্যা শিশুকে উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা করি।
মন্তব্য করুন