দীর্ঘ এক যুগ ভারতে পালিয়ে থাকার পর দেশে ফিরেই মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. সালাউদ্দিন গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বরগুনায় অপহরণের পর আলোচিত অনিক চন্দ্র রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি সালাউদ্দিন গাজীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
শনিবার (২৪ মে) বেলা ১২টার দিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।
এর আগে শুক্রবার (২৩ মে) রাত ৯টার দিকে তালতলী উপজেলার ফকিরহাট নামক এলাকা থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সালাউদ্দিন বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের কাঁঠালতলী নামক এলাকার আবদুস ছত্তার গাজীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে বরগুনা পৌর শহরের শহীদ স্মৃতি সড়কের থানাপাড়া নামক এলাকার বাসিন্দা সুবল চন্দ্র রায়ের ছেলে অনিক চন্দ্র রায় বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে দীর্ঘসময় পার হলেও সে আর বাড়িতে ফেরেনি। পরদিন সকালে অজ্ঞাত একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল করে অনিকের বাবা সুবল চন্দ্রের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে, ওই মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। পরে সালাউদ্দিন গাজীকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
পরে গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অপহরণের পর মুক্তিপণের দাবি করে ডিশ লাইনের তার দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে অনিককে হত্যা করা হয়। পরে ঘটনার ১৭ দিন পর বরগুনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সেফটি ট্যাংকি থেকে নিখোঁজ অনিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত আসামি ৬ জনের মধ্যে দুজনকে যাবজ্জীবন এবং প্রধান আসামি সালাউদ্দিন গাজীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া অপর তিন আসামির জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে মামলার পরপরই মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামি সালাউদ্দিন ভারতে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে ভারত থেকে ফিরে আসার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বরগুনার তালতলী উপজেলার ফকিরহাট থেকে সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অপহরণের পর হত্যার শিকার অনিকের বাবা সুবল চন্দ্র রায় বলেন, আমার ছেলেকে অপহরণের পর হত্যা করেছে আসামিরা। এছাড়াও আমার কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণও চায় তারা। তবে তাদের কথা অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে গেলেও তাদের দেখা পায়নি। এ ঘটনায় দীর্ঘ বছর পালিয়ে থাকার পর প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সালাউদ্দিনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দ্রুত কার্যকর চাই।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান কালবেলাকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড সজাপ্রাপ্ত আসামি মো. সালাউদ্দিন গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘ নয় বছর ভারতে পালিয়ে ছিল। সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন