বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

চিরকুটে লেখা ছিল ‘নিজের সাথে যুদ্ধ করে ক্লান্ত আমি’

শেবামেক শিক্ষার্থী সজীব বাড়ৈ। ছবি : সংগৃহীত
শেবামেক শিক্ষার্থী সজীব বাড়ৈ। ছবি : সংগৃহীত

‘নিজের সাথে যুদ্ধ করে ক্লান্ত আমি। একটু বিশ্রাম চাই। ক্ষমা করে দিও। এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না।’ পড়ালেখার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে চিরকুটে কথাগুলো লিখে নিজের শরীরে নিজেই ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবামেক) শিক্ষার্থী সজীব বাড়ৈ।

শনিবার (২৪ মে) বিকেল ৫টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সজীব বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ৫০তম ব্যাচের ছাত্র।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সজিবের সহপাঠীরা এখন ইন্টার্নশিপ করছে। অথচ সজীব বাড়ৈ তৃতীয় বর্ষেই আটকে ছিল। ক্লাসের বন্ধুদের এগিয়ে যাওয়া, শিক্ষকদের অপমান এবং পরিবারের অতি শাসন আর নিজের পিছিয়ে যাওয়ার টেনশনে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে সজীব। তাছাড়া সজীবের এই আত্মহত্যার পেছনে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক ডা. মো. আসাকেও দায়ী করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি সূত্র।

সজীবের রুমমেট সুমন হালদার জানান, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে প্রায়ই অসুস্থ হয় সজীব বাড়ৈ। পরীক্ষা এলে ভয়ে এ অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। এ কারণে তৃতীয় বর্ষে মাইক্রোবায়োলজিতে আটকে আছে সে। তার সঙ্গের শিক্ষার্থীরা সবাই ইন্টার্নশিপ করছে। ক্লাস, এক্সামে খুবই ভয় পেত সজীব। যার কারণে গত বৃহস্পতিবার রাতে অতিরিক্ত চিন্তায় ‘ক্লোনাজিপাম ফ্লুক্সেটিন গুঁড়া’ করে শরীরের শিরা দিয়ে পুস করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। সহপাঠীরা টের পেয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করলে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

শেবামেক শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রোববার (২৫ মে) সকালে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের পারিবারিক শ্মশানে নিহত সজীবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সময় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

সজীবের প্রতিবেশী সাংবাদিক ওমর আলী সানী বলেন, নিহত সজীব ছিলেন বাকাল গ্রামের বাসিন্দা দুরারোগ্য ব্যাধিতে (ব্রেন টিউমার) আক্রান্ত সুধীর বাড়ৈর ছেলে। সজীবের বাবা ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের সাথী টেইলার্সের মালিক। দীর্ঘদিন পূর্বে তিনি ব্রেন টিউমারসহ বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে কর্মক্ষম হয়ে পড়েন। পরিবারের বড় সন্তান ছিলেন সজীব। এলাকার বিত্তশালীদের সহযোগিতায় চলছিল সজীবের পড়ালেখা।

কলেজ অধ্যক্ষ ডা. ফয়জুল বাশার কালবেলাকে জানান, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে কিছুদিন আগে সজীব শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর তাকে বরিশালের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা পাঠানো হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিশ্চিত থাকেন, দেশের অনিষ্ট হয় এমন কোনো কাজ হবে না : ড. ইউনূস

বেসরকারি সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রশাসক’ নিয়োগ দিল সরকার

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সদস্যের ওপর হামলা

দেশের অনিষ্ট হয়, এমন কাজ করবেন না প্রধান উপদেষ্টা

লেখক প্রশান্ত হালদারের দরজায় রাখা হতো মলমূত্র

জুলাইকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জুলাই ঐক্যের

২৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার ৪০১ কোটি টাকা

নির্বাচন ৩০ জুনের ওই পারে যাবে না : প্রেস সচিব

এলএসডিতে শতাধিক গরু অসুস্থ, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে নতুন মাইলফলক

১০

গত ১৬ বছর দুর্নীতির চাষাবাদ হয়েছে : দুদক কমিশনার হাফিজ

১১

অবৈধ রেলিক সিটির চেয়ারম্যানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে রাজউকের মামলা

১২

আগামী প্রজন্ম নজরুলকে নিয়েই এগোবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

১৩

সোমবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন পৌনে চার লাখ শিক্ষক

১৪

ট্রাম্পের ‘গোল্ডেন ডোম’ কি আয়রন ডোমের চেয়েও শক্তিশালী হবে?

১৫

চোখ হারানো চিকিৎসারত চার জুলাই যোদ্ধার বিষপান

১৬

অজ্ঞান পার্টি সন্দেহে দুই ইরানি যুবককে গণধোলাই

১৭

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি

১৮

বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রার্থীদের জন্য সুখবর

১৯

অবসর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেননি ধোনি

২০
X