মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

সাগর গর্ভে কুয়াকাটায় ৪ কোটি টাকার সড়ক, তদন্তে কমিটি

কুয়াকাটার সৈকতের নতুন নির্মিত সড়কটি জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। ছবি : কালবেলা
কুয়াকাটার সৈকতের নতুন নির্মিত সড়কটি জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। ছবি : কালবেলা

কুয়াকাটার সৈকতের নতুন নির্মিত সড়ক গভীর নিম্নচাপজনিত জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ে সৃষ্ট ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে সৈকত এলাকার হোটেল সিভিউ থেকে ঝাউবন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ মিটার দীর্ঘ এই সড়কের বড় একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। সড়কটির ভাঙনের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাতে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেয়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি ঘিরে স্থানীয় জনগণ, নাগরিক সমাজ এবং নেটিজেনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেকে সড়কটির নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের বিচার দাবি করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

এদিকে শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় কুয়াকাটা পৌরসভার সদ্য নির্মিত সড়ক ধ্বংসের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইয়াসীন সাদেককে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন— পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, এলজিইডি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং কোনো ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই কাজ শুরু করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় বালি ও পাতলা সিসি ঢালাই দিয়ে রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল।

জানা গেছে, সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের আমলে এই দুই কিলোমিটার সড়ক তিনটি প্যাকেজে নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৩০০ মিটার অংশের কাজ আংশিকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে বাকি অংশে কাজ শুরু হয়নি। প্রকল্পটি ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন ছিল। অনেকেই দাবি করেছেন, এটি আনোয়ার হাওলাদারের আত্মীয়স্বজন দিয়ে পরিচালিত একটি ব্যক্তিস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এবং প্রকৃত টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।

অপসারিত মেয়র আনোয়ার হাওলাদার অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্পটি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার দিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি। সিসি ঢালাইয়ের পর আরসিসি কাজ হওয়ার কথা ছিল এবং গাইড ওয়াল নির্মাণের পরিকল্পনাও ছিল।

কুয়াকাটা পৌরসভার প্রকৌশলী সুজন জানান, তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে এবং তারা ইতিমধ্যে দেড় কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য মুরাদনগর বিএনপির দোয়া মাহফিল

মধ্যপ্রাচ্য : বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র

ফের ইউনেস্কো থেকে বের হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

নিহত বেড়ে ৩২, অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক

বিধ্বস্তের আগে কন্ট্রোল রুমে কী বলেছিলেন পাইলট তৌকীর

সরকারকে কঠোর হতে বলল রাজনৈতিক দলগুলো

তুরস্ক থেকে হাসপাতালে ছুটে এলেন বিমান বাহিনীর প্রধান 

২৫তম বিসিএস (পুলিশ) ফোরামের নতুন কমিটি

জাতি শিল্পীদের কাছে আরেকটু দায়িত্বশীলতা আশা করে : সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এই শোকের সময়ে শান্ত থাকার আহ্বান তারেক রহমানের

১০

প্রধান উপদেষ্টার পাশে থাকার আশ্বাস চার দলের

১১

সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে সফল রাষ্ট্র বানানো সম্ভব নয় : হাসনাত কাইয়ূম

১২

মামদানির নীতিকে ‘ননসেন্স’ বললেন নেতানিয়াহু

১৩

‘হানির লগে যুদ্ধ করি ত্রিশ বছর কাডাই দিছি’

১৪

ট্রাম্পের চাওয়ায় কোকা-কোলায় এলো পরিবর্তন

১৫

নকল সিগারেট তৈরির কারখানার সন্ধান, আটক ৪

১৬

ওষুধের দাম বেশি নিলে ছাড় নয়, ভোক্তা অধিদপ্তরের হুঁশিয়ারি

১৭

সেই শিক্ষক মাহরিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাতিজি

১৮

২১ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২০ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা

১৯

জবিতে জনপ্রশাসন সংস্কার ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের গতিপথ শীর্ষক সেমিনার

২০
X