মৌলভীবাজারের জুড়ীতে মেয়েকে সাঁতার শেখাতে গিয়ে পুকুরে ডুবে বাবা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৯ জুন) বিকেল ৪টায় জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
মৃত দুজন হলেন- হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা ইটভাটা ব্যবসায়ী বাবুল আহমদ (৬০) ও তার মেয়ে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হালিমা মোহাম্মদ (১৮)। আগামী ২৬ জুন এইচএসসি পরীক্ষায় হালিমার অংশগ্রহণের কথা ছিল।
জানা গেছে, ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী বাবুল আহমদের পরিবার। সেই সুযোগে সাঁতার শিখতে পুকুরে নেমেছিল মেয়ে হালিমা আর সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা বাবুল। একপর্যায়ে মেয়ে ডুবে গেলে তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় দুজনই ডুবে মারা যান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বাবুল আহমদের স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। চার সন্তান ঢাকায় পড়াশোনা করেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্ত্রী-সন্তানসহ বেড়াতে আসেন বাড়িতে। সন্তানরা সাঁতার জানে না। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে দ্বিতীয় মেয়ে হালিমাকে নিয়ে পুকুরে নেমে প্লাস্টিকের টিউবের সাহায্যে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা বাবুল আহমদ। একপর্যায়ে টিউব থেকে হাত ফসকে হালিমা পানিতে ডুবে যায়। বাবুল মেয়েকে রক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা করেন। পরে দুজনে ডুবে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে গিয়ে পুকুরে নেমে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পরে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বাবুল আহমদের আত্মীয় ও জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজাদ মিয়া বলেন, সোমবার রাত ১০টায় বাবুল ও তার মেয়ের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
এদিকে বাবা-মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা জানাতে হামিদপুর গ্রামে তাদের বাড়িতে উপস্থিত হন।
জুড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জহিরুল হক বলেন, পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় বাবা-মেয়ের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন