বরিশাল বিভাগের ৪০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটিতেও করোনা পরীক্ষার জন্য কিটসসহ অন্যান্য উপকরণ নেই। ফলে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন করোনার লক্ষণ নিয়ে আসা রোগীরা। তবে দু-এক দিনের মধ্যে কিটসসহ অন্যান্য উপকরণ চলে আসবে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সরেজমিন পরিদর্শন ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তথ্যমতে, বরিশাল বিভাগের দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ছয় সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় করোনা পরীক্ষার জন্য কিটসসহ অন্যান্য উপকরণ নেই। কিছু হাসপাতালে যেসব উপকরণ রয়েছে, তা ব্যবহার অনুপযোগী।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরীর পলাশপুরের বাসিন্দা কাওসার হোসেন বলেন, করোনার লক্ষণ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি টেস্ট করা যাবে না। কয়েকদিন পর আসতে বলছে। এখন অসুস্থ শরীর নিয়ে কোথায় যাব? এভাবে হাসপাতাল চলতে পারে না।
বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা ইউনুস বলেন, সরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এটি খুবই দুঃখজনক।
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মলয় কৃষ্ণ বড়াল কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনো সুবিধা নেই। দুই বছর আগের কিট দিয়ে পরীক্ষা সম্ভব নয়। এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষকে নতুন কিট ও সরঞ্জাম পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। এখন কেবল উপসর্গের ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যেমন ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, করোনা আইসোলেশনের জন্য হাসপাতালের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে। আগমী সপ্তাহে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে এ বিভাগে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। নতুন করে করোনার প্রকোপ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এ জন্য বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ৪০টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন ব্যবস্থা চালুর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুক্র বা শনিবারের মধ্যে করোনা পরীক্ষার কিটসসহ সব উপকরণ চলে আসবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দুই দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার ২০২২ সাল থেকে নিম্নমুখী হতে শুরু করে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২৫ সালের ৩ জুন পর্যন্ত করোনায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
মন্তব্য করুন