সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২
খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫১ পিএম
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, ১০:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অবিবাহিত তরুণীর নামে মাতৃত্ব ভাতা, টাকা যাচ্ছে মেম্বারের জামাতার পকেটে!

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি : কালবেলা
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ। ছবি : কালবেলা

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় এক অবিবাহিত তরুণীর নামে চালু রয়েছে মাতৃত্বকালীন ভাতা! অথচ নিজেই জানেন না এমন ভাতার কথা। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ভাতার টাকা চলে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের এক নারী সদস্যার জামাতার মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে।

ঘটনাটি ঘটে উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগমের সুপারিশে। অভিযোগ উঠেছে, তার সহায়তায় ভুয়া তথ্য দিয়ে আংগারপাড়া ইউনিয়নের তালেব মেম্বারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাবের মেয়ে আক্তারিনা আক্তারকে গর্ভবতী দেখিয়ে মাতৃত্ব ভাতার আবেদন করা হয়। আবেদনপত্রে স্বামীর নাম দেওয়া হয় ‘পায়েল’ এবং একটি গর্ভাবস্থার সনদপত্র সংযুক্ত করা হয়।

২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে এ ভাতার আবেদন করা হয় এবং সেটি অনুমোদনও পেয়ে যায়। এরপর থেকে প্রতি মাসে ৮০৫ টাকা হারে ওই ভাতা তোলা হচ্ছিল ইউপি সদস্যার জামাতার মোবাইল নম্বর সংযুক্ত এক নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। অথচ আক্তারিনা আক্তার এখনো অবিবাহিত এবং কোনো মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা তার জীবনে ঘটেনি।

ভুক্তভোগী আক্তারিনা বলেন, ‘আমি অবিবাহিত, এমন কোনো ভাতা সম্পর্কে কিছুই জানি না। যারা এসব করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’

ঘটনার সত্যতা উঠে আসে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাম্প্রতিক যাচাই-বাছাইয়ে। তদন্তে দেখা যায়, ভাতার জন্য ব্যবহার করা মোবাইল নম্বরটি ইউপি সদস্যা নুরনাহার বেগমের জামাতার। নাম বিভ্রাট নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। আক্তারিনা দাবি করা হলেও তার স্ত্রীর প্রকৃত নাম সুরাইয়া আক্তার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্যা মোছা. নুরনাহার বেগম স্বীকার করে বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। আমার মেয়ে অসহায়, তার বয়স কম হওয়ায় অন্য জনের এনআইডি দিয়ে কার্ড করেছি।’

উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা মোস্তারি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অবিবাহিত তরুণীর নামে হওয়া ভাতা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন অনৈতিক কাজ অপ্রত্যাশিত। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

স্থানীয়দের দাবি, এমন জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকৃত উপকারভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অনিয়মে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পায়রা বন্দর ঘিরে বহুমুখী পরিকল্পনা করেছে সরকার : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

মিরপুরে বাসায় ডাকাতি, পালানোর সময় আটক ৪

যারা মবতন্ত্র কায়েম করতে চায়, তারাই নির্বাচনবিরোধী : টুকু

স্বাধীনতা বিরোধীদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে : বিএনপি নেতা নীরব

৪৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হলেন সাব্বিরুল আলম

আজ ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’, অনুষ্ঠানমালা থাকছে সারা দিন

সরকারের অভিলাষ নিয়ে আমরা শংকিত : চরমোনাই পীর

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর ধৃষ্ঠতাপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে : লুৎফর রহমান

পিনাকী ভট্টাচার্যসহ বেশ কয়েকজনকে ধন্যবাদ জানালেন জামায়াত আমির

১০

গণমিছিলে গিয়ে বিএনপি নেতার আকস্মিক মৃত্যু

১১

বাহাত্তরের সংবিধানে সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি : নাহিদ

১২

খাদ্যের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত নেতানিয়াহু

১৩

আমরা অনেক ডিফিকাল্টির মধ্যে আছে : নাহিদ 

১৪

সাকিবের জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে কী বললেন মির্জা ফখরুল

১৫

এনআইডি আবেদনে ফের সুযোগ

১৬

সীমিত হতে পারে টেস্ট খেলুড়ে দেশের সংখ্যা!

১৭

মাদ্রাসার শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা, গণপিটুনিতে হত্যাকারী নিহত

১৮

পল্টন মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণ

১৯

একাত্তরের মতো চব্বিশ নিয়ে যেন চেতনা ব্যবসা না হয় : সালাহউদ্দিন আহমেদ

২০
X