কক্সবাজারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হলেও বিকেল থেকে আর বৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়া টানা বৃষ্টির ৫ দিন পর সুসংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, ‘সমুদ্র বন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরগুলোকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।’
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি দুই থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত দুদিনে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের দশটি পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী, শৈবাল পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, ডায়াবেটিক পয়েন্টসহ বেশ কয়েকটি পর্যটন স্পটে প্রবল ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের অস্থায়ী স্থাপনা। উপড়ে গেছে সৈকতের দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য ঝাউগাছ।
এ ছাড়া জোয়ারের আঘাতে কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের ৪টি স্পটে আবারও ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ রোডের টেকনাফ অংশ এবং উখিয়ার পাটুয়ারটেক এলাকায় এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
তাছাড়া জোয়ারের পানি ঢুকেছে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের লোকালয়ে। সেন্টমার্টিনের উত্তরপাড়া ও পশ্চিম প্রান্তে জোয়ারের পানির তোড়ে পর্যটন রিসোর্ট হুমকির মুখে পড়েছে। কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের গোসলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগন্তুক পর্যটকদের হাঁটুপানির নিচে নামতে নিষেধ করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা। তবে অতি উৎসাহী কিছু পর্যটক মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই সাগরে নেমে পড়েছেন।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাব এবং অমাবস্যার কারণে সাগরে জোয়ারের পানি ২-৩ ফুট উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কুতুবদিয়া, মহেশখালী দ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের আনিসের ডেইল, তাবলর চর ও কাহারপাড়া, সাইটপাড়া ও বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের অর্ধশত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর, জলাশয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
অন্যদিকে মহেশখালীর ধলঘাটা ও মাতারবাড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ দুই উপজেলার সাগর তীরবর্তী প্রায় কয়েক হাজার মানুষ অজানা আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তাদের একটাই দাবি, ভাঙনকবলিত এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হোক।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যাথোয়াই প্রু মারমা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে।
মন্তব্য করুন