রাজধানীর ডেমরার মধ্য হাজীনগর এলাকায় একটি ৬ তলা ভবন হেলে পড়েছে পাশের ৭ তলা ভবনে। রোববার (২৭ জুলাই) বিকালে ম্যানশন ভবন নামের ঝুঁকিপূর্ণ ওই ৬ তলা থেকে সকল ভাড়াটিয়া ও মালিককে নিরাপদে বের করে আনা হয়েছে।
এদিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৮ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিরুর রহমান, ডেমরা থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করেন। এ সময় ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এরইমধ্যে ভবন খালি করার নির্দেশ ডিএসসিসি ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
তবে হেলে পড়া ভবনের পাশের ৭ তলা ভবনবাসীরা চরম আতংকে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ যে কোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিএসসিসির ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজি মোয়াজ্জেম আলী স্কুল এবং বাইতুল কাওছার জামে মসজিদ সংলগ্ন হোল্ডিং নং ১০৬-এ অবস্থিত ওই হেলে পড়া ভবন। এটি শহীদ মিয়া নামের এক প্রবাসীর মালিকানাধীন। এটি হেলে পড়েছে পার্শ্ববর্তী হোল্ডিং নং ১০৫-এ অবস্থিত হাবিবুর রহমান সোহাগের সাততলা ভবনের দিকে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন ধরে ভবনটি সামান্য হেলে ছিল। তবে রোববার দুপুর থেকে স্পষ্টভাবে পাশের ভবনের গায়ে ঠেকে গেছে ওই ভবন। মধ্য হাজিনগরের প্রবেশ মুখে হওয়ায় শুধু ভাড়াটিয়াই নয়, সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষও এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
জানা যায়, ভবনটি ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন সারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে নির্মাণ করা হয়।
ভবনের মালিক মো. শহীদ মিয়া জানান, ‘বিদেশে রক্ত পানি করা উপার্জনের টাকায় এ ম্যানশন ভবন নির্মাণ করেছি। এটাই আমার একমাত্র সম্বল। কোনো ত্রুটি ছিল না নির্মাণে। এখন ভবনটা নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না। চোখের সামনে সবকিছু ভেঙে পড়ছে।’
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জোনের-৮ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় আমরা প্রাথমিকভাবে নোটিশ দিয়ে ভবনবাসীদের সরিয়েছি। এখন মাল সামানা সরানো হচ্ছে। আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আগেই আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘ভবনের মালিক যদি কোনো স্বীকৃত ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টের মাধ্যমে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেন, তখন পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তা না হলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হিসেবেই থাকবে।’
এ বিষয়ে রাজউকের অঞ্চলের-৮ অথরাইজড অফিসার জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘এরইমধ্যে ভবনবাসীদের নিরাপদে বের করা হয়েছে। পরে রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভবন সিলগালাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে সর্বক্ষণ ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন