বাংলাভাষী ভারতীয় মুসলিমদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে বেআইনিভাবে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানালেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর প্রধান ও লোকসভা সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘু ও দরিদ্র মুসলিম শ্রেণির বিরুদ্ধে নিপীড়ন চালাচ্ছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শনিবার এক্স-এ ধারাবাহিক একাধিক পোস্টে ওয়াইসি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই সরকার শক্তের সামনে দুর্বল, আর দুর্বলের ওপর শক্ত প্রয়োগে সিদ্ধহস্ত।’
ওয়াইসি জানান, দেশের নানা প্রান্তে বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে বেআইনিভাবে আটক করা হচ্ছে, যাদের অধিকাংশই প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক। তিনি বলেন, ‘এই মানুষগুলো নির্মাণ শ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা রাস্তার আবর্জনা সংগ্রহের কাজে যুক্ত। দরিদ্র হওয়ায় তারা পুলিশের অন্যায় বা প্রশাসনিক হয়রানির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাতে অক্ষম। সেই অসহায়তাকেই কাজে লাগিয়ে চলছে প্রশাসনিক নিপীড়ন।’
গুরুগ্রামের জেলা প্রশাসকের এক সাম্প্রতিক নির্দেশিকার প্রসঙ্গও টেনে আনেন ওয়াইসি। সেখানে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের শনাক্ত করে ফেরত পাঠানোর জন্য এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) অনুসরণের নির্দেশ রয়েছে। এই নির্দেশিকার প্রসঙ্গে ওয়াইসি বলেন, ‘শুধু বাংলা ভাষায় কথা বললেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। ভাষা কোনো অপরাধ নয়। ভাষার ভিত্তিতে গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি।’
সম্প্রতি পুনের রেড-লাইট জোন এলাকা বুধওয়ার পেঠ থেকে পাঁচ বাংলাদেশি নারীকে গ্রেফতারের ঘটনাও তুলে ধরেন তিনি। পুলিশের দাবি, ওই নারীরা ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এ বিষয়ে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
কিন্তু ওয়াইসির প্রশ্ন, ‘এই ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনার দোহাই দিয়ে কীভাবে হাজার হাজার বাংলাভাষী মুসলিমকে অবৈধ বলে চিহ্নিত করা যায়?’
তার ভাষায়, এটি একটি স্পষ্টভাবে ‘ব্যাকডোর এনআরসি’ বাস্তবায়নের চেষ্টা। ওয়াইসি বলেন, ‘এটি নৈতিকভাবে সম্পূর্ণ ভুল। ভারতীয় নগিরিক কাউকে বন্দুক দেখিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
মন্তব্য করুন