বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুন্দরবনে বেড়েছে ১০ শতাংশ বাঘ

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে প্রায় ১০ শতাংশ বাঘ বেড়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নেওয়া উদ্যোগ, নিরাপত্তা জোরদার, বাঘ শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি বন বিভাগের।

বন বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। ২০২৩ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে জরিপ করা হয়। ২০২৪ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাঘের সংখ্যা ১২৫টি উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ প্রায় ১০ শতাংশ বাঘ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি এর সুরক্ষা, প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি, বাঘের শিকার প্রাণীর সংখ্যা বাড়ানোসহ সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করতে হবে বন বিভাগকে।

অন্যদিকে সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে গত ২৫ বছরে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২৫ জন মানুষ। আহত হয়েছেন আরও ৯৫ জন। বৈধ কিংবা অবৈধভাবে বনজ সম্পদ আহরণ করতে গিয়ে এসব মানুষের জীবন থেমে গেছে বাঘের থাবায়।

শরণখোলার মো. আব্দুস সামাদ হাওলাদার এখনো বেঁচে আছেন, তবে হারিয়েছেন দুই চোখ। আড়াই দশক আগে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের মুখোমুখি হন তিনি। অন্য সঙ্গীরা এগিয়ে এলে প্রাণে বাঁচেন, তবে ক্ষত সেই যে লেগেছে, সারাজীবনের।

২০২৩ সালের পহেলা অক্টোবর মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের শিকার হন আরেক যুবক শিপার হাওলাদার (২২)। চার দিন পর তার বিচ্ছিন্ন মাথা ও প্যান্ট উদ্ধার করে স্থানীয়রা। সরকারি অনুমতি ছাড়া বনে প্রবেশ করায় তার পরিবার কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি। এখন তার স্ত্রী, সন্তান আর বৃদ্ধ বাবা-মা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।

বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০১১ সালে ক্ষতিপূরণ নীতিমালা কার্যকর হওয়ার পর এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৬৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, কেউ মারা গেলে ১ লাখ টাকা, আহত হলে ৫০ হাজার টাকা এবং বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, এ ক্ষতিপূরণ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। নিয়মের জটিলতায় অনেকেই তা পান না। বন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা বাঘের আক্রমণে নিহত পরিবারের জন্য আজীবন মাসিক ভাতার দাবি জানাই।

বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব কমাতে ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম গঠন, ৭৪ কিলোমিটার বনের সীমানায় ফেন্সিংয়ের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার সম্পন্ন, জিরো টলারেন্স নীতি, বাঘের নিরাপত্তায় সুপেয় পানি ও আবাসস্থল তৈরির মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তবে বাঘ সুরক্ষা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। সুন্দরবন রক্ষায় আমরা সংগঠনের সমন্বয়কারী নুর আলম শেখ বলেন, ২০১০ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত অভিবর্তনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১২ বছরে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে হবে। সে হিসেবে এ বৃদ্ধি আশানুরূপ নয়।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বিষ দিয়ে মাছ শিকার, আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের তৎপরতা সব মিলিয়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকিতে। এখনই সুরক্ষা জোরদার না করলে সুন্দরবন ও এর বন্যপ্রাণীর ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদেরের পদ স্থগিত

লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে তিস্তার পানি

বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতির ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

ছারছীনা পীরকে তারেক রহমানের ‘সালাম’

ড্যাবের ৮ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বিএনপির

বাংলাদেশে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে হানডা

পুলিশের ১১ কর্মকর্তাকে বদলি

বিএনপি নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া

সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য, আছে শর্ত

সত্য বললে আর মামলা-নির্যাতন হবে না : আমিনুল হক

১০

খুলনার ভিডিও নিয়ে শ্যামনগরে চিকিৎসকদের নামে অপপ্রচারের অভিযোগ

১১

মিরসরাইয়ে বিএনপি-যুবদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা বহিষ্কার

১২

ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী-ভোটাররা যা করতে পারবেন, যা পারবেন না

১৩

বিসিসিআই অফিসে ৮ লাখ টাকার জার্সি চুরি, গার্ড গ্রেপ্তার

১৪

‘জুলাই সনদ’ ২ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির

১৫

মসজিদের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ চেয়ে ইউএনওর কাছে ছাত্রদল নেতার আবেদন

১৬

যে শহরে থাকলেই মিলবে ৬০ লাখ টাকা, শুধু থাকতে হবে সেখানে

১৭

আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখতে এনসিপি নেতাদের প্রতি আহ্বান প্রিন্সের

১৮

এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি

১৯

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আতঙ্কে এলাকাবাসী

২০
X