লালমনিরহাট ও হাতিবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বেড়েই চলেছে তিস্তার পানি, বাঁধের রাস্তায় চলছে রান্না

বাঁধের ওপর চলছে রান্না। ছবি : কালবেলা
বাঁধের ওপর চলছে রান্না। ছবি : কালবেলা

তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে ভোগান্তিতে বানভাসিরা। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর চুলা জ্বালিয়ে করা হচ্ছে রান্নার কাজ। এখনো জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। পাঁচ শতাধিক পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা করেছে জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) মধ্যরাতে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে বুধবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে পানি বেড়ে দুপুর ১২টা থেকে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে দেখা দিয়েছে বন্যা। আকস্মিক বন্যায় হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, সিন্দুরনা, পাটিকাপাড়া, গড্ডিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোর ১৫টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পরে পানি কিছুটা কমে গেলেও এখনো প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

বসতবাড়িতে পানি ওঠায় দুর্ভোগে পড়েন সেসব এলাকার মানুষ। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। পানির তোড়ে ভেঙে যায় রাস্তাঘাটও। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় রাস্তায় চুলা জ্বালিয়ে কেউ করছেন রান্নার কাজ, আবার কেউ ওই রাস্তার ধারে একচালা ঘর করে গরু ছাগল নিয়ে একই ঘরে বিছানা পেতেছেন।

এদিকে জেলার ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পানি উঠেছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এ কারণে বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী আসতে পারেনি। স্কুলে পানি ওঠায় জেলা সদরে ৬টি ও আদিতমারী উপজেলায় ৬টি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের স্কুলে না আসার পরামর্শ দেন শিক্ষকরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লিটন দাস বলেন, যে সব বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে সেসব বিদ্যালয় শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বন্যার পানি নেমে যাওয়া পর্যন্ত পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার জানান, বন্যার্তদের সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র। ইতোমধ্যে বন্যার্ত ৫ শতাধিক পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল, শুকনো খাবার, ডাল ও চিড়া বিতরণ করা হয়েছে। তালিকা মতে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জীবনহানির শঙ্কায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দোলনের জিডি

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি ছিল অগ্রভাগে : সাঈদ আহমেদ

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শাহবাগ ব্লকেড

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে গোলাগুলি, অভিযুক্ত বাবা-ছেলে

এভারকেয়ার থেকে বিমানবন্দরে নেওয়া হচ্ছে ওসমান হাদিকে

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণসহ ৫ দাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের

আইপিএলে পুরো মৌসুমে নেই বাংলাদেশিরা, নিলামে দল পাওয়া নিয়ে সংশয়

লবণ খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসক

নিজ বাড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু হলিউড নির্মাতা দম্পতির

ডিবি হেফাজতেই আনিস আলমগীর, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে

১০

সাময়িক বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল

১১

নৌপরিবহন উপদেষ্টা / জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত

১২

বন্ডি বিচে সন্ত্রাসী হামলা / ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বললেন মাইকেল ভন

১৩

এক কলেজ থেকে মেডিকেলে সুযোগ পেলেন ৪৫ শিক্ষার্থী

১৪

দিল্লিতে ঘন কুয়াশা, ফ্লাইট চলাচলে ব্যাপক বিঘ্ন

১৫

দেশে মৌলবাদী চক্রের সব ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে : সেলিমুজ্জামান

১৬

মৃত্যুদণ্ড চেয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আপিল আজ

১৭

মালদ্বীপে কাভা কাপে অংশ নিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ নারী ভলিবল দল

১৮

আনিস আলমগীর-শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

১৯

নামাজ পড়তে পড়তে কপালে দাগ ওঠা কি নেককার হওয়ার লক্ষণ?

২০
X