রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২২ পিএম
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাজশাহীতে বিএনপির সম্মেলন রোববার, পরিবর্তনের হাওয়া নাকি ধারাবাহিকতা

ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

রাজশাহী মহানগর বিএনপির বহুল প্রতীক্ষিত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল রোববার। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে কে আসছেন নতুন নেতৃত্বে, তা নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। নতুন কমিটিতে নবীনদের জোয়ার, নাকি অভিজ্ঞ পুরোনোদের হাতেই থাকবে হাল- এ প্রশ্নও ঘুরছে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত।

সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি আর সাংগঠনিক তৎপরতায় ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে দলের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঐক্যের বার্তা দেবেন বলে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

দলীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন পর মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্ট সরকারের জেল-জুলুমের শিকার নেতাকর্মীরা কাজ করছেন নব-উদ্যমে। পরিবর্তনের স্রোত আর অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতার এ লড়াইয়ে রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে আছে আগামীকালের সিদ্ধান্তের দিকে। কমিটি গঠনে প্রজন্মের ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা থাকলেও অভ্যন্তরীণ সমীকরণে শেষ মুহূর্তে চমক আসতে পারে।

এদিকে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলন সফল করতে মহানগরের প্রতিটি ইউনিটে কর্মিসভা, মতবিনিময় ও প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। নেতৃত্ব নির্বাচনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোট অথবা সবাই মিলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর দায়িত্ব দিতে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।

তবে সম্মেলনে পদের বিষয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও উচ্চ পর্যায়ে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। আসন্ন কমিটিতে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে নবীন মুখ আসতে পারে বলে ধারণা তৃণমূলের। এদের মধ্যে সভাপতি পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন- বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, সাবেক সিটি মেয়র ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা ও সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আলোচনায় আছেন- বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিউল হক রানা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট, নগর যুবদলের আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা মাহফুজুর রহমান রিটন।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা বলেন, রাজশাহী বিএনপির নেতাকর্মীরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মূল্যবান নির্দেশনা পেতে উন্মুখ হয়ে আছেন। দলকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতেই সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন আহ্বায়ক কমিটি আছে। যখন রেগুলার কমিটি হবে, তখন দল চাঙ্গা হবে। গণতান্ত্রিকভাবে যাকে নির্বাচিত করা হবে, তিনিই নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এবার প্রায় ৭০০ কাউন্সিলর থাকছেন। আশা করছি, এ সম্মেলনের পর দলের সব বিভক্তি কেটে যাবে।

সাবেক ছাত্রনেতা ও যুবনেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট বলেন, ‘আমরা আনন্দিত অনেক দিন পর দলের সম্মেলন হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। সম্মেলন নিয়ে এক প্রকার হতাশাও কাজ করছে। আর মাত্র দুদিন পরে সম্মেলন; কিন্তু এখনো পর্যন্ত তপশিল হয়নি, থানা কমিটিগুলো অনুমোদন হয়নি। কারা ভোটার, কতজন ভোটার সেটাও জানি না। সব মিলে অন্ধকারের মধ্যে আছি।’

রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন, দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় দলের সঙ্গে কাজ করছি। আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছি। দলকে আগলে রেখেছি। দলের নেতাকর্মীরা যদি সমর্থন দেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি দায়িত্ব দেন, তাহলে দলকে সুসংহত করতে বিগত দিনের মতোই কাজ করব ইনশাআল্লাহ।

এদিকে মিডিয়া সেল উপকমিটির এক ব্রিফিংয়ে অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, সাবেক বর্তমান কাউকে বাদ দিয়ে নয়। ঐকমত্য ও সবার সম্মতিতে কাউন্সিল হবে। বিএনপির এ সম্মেলন হবে উৎসবমুখর, মিলনমেলায় পরিণত হবে এটা। রাজশাহী মহানগরীর সাংগঠনিক সাতটি থানা ও ৩৫টি ওয়ার্ডের সব কাউন্সিলর ও ডেলিগেটেডসহ সব নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন।

রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, আমরা নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে সম্মেলনের আয়োজন করেছি। এ সম্মেলন সফল করতে বিভিন্ন উপ-কমিটি করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সেগুলো সমন্বয় করছি।

তিনি আরও বলেন, সম্মেলন দলের চলমান প্রক্রিয়া। আমরা মনে করি, এ সম্মেলনকে ঘিরে দল চাঙ্গা হবে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন গতি আসবে। নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের ৭৬৮ জন কাউন্সিলর ভোট দিতে পারবেন, আবার তারা সমঝোতার মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করলে তিনি কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পরীকে সরি বলে কে আইফোন গিফট করল!

দাঁড়িয়ে পানি পান করলে কি ক্ষতি হয়

‘দে দে পেয়ার দে ২’-এর টিজারই থাকবে চমক

খাগড়াছড়িতে গুলিতে নিহত তিনজনের পরিচয় প্রকাশ

কোনো ধর্মীয় উৎসবকে রাজনৈতিক কূটচালের শিকার হতে দেব না : হাসনাত

ধর্মঘট প্রত্যাহারের ২ ঘণ্টা পর ফের বন্ধ দূরপাল্লার বাস

ইসরায়েলে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আলোচিত নতুন লোগো সরিয়েছে জামায়াত

মালয়েশিয়াগামী ১৬০০ প্রার্থীর সাক্ষাৎকার কখন, জানাল বোয়েসেল

 বিশ্ব হার্ট দিবস উদযাপন করলো মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার

১০

সাবেক এমপি বাদল কারাগারে

১১

নগর, পরিবেশ, পরিকল্পনা ও ঢাকা : এক সংকটময় সন্ধিক্ষণ

১২

পান্থর অতিথি জুয়েল আইচ ও তারিক আনাম খান

১৩

এশিয়ান থ্রোবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাব রানার্সআপ

১৪

রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতাদের জন্য ৫৮.৬ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি

১৫

ডায়েটিশিয়ান পদে নিয়োগ দিচ্ছে এভারকেয়ার হাসপাতাল

১৬

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ হঠাৎ কক্সবাজারে, থাকছে সারপ্রাইজ

১৭

কুষ্টিয়ায় দুপক্ষের সংঘর্ষ, বিএনপির অফিস ভাঙচুর

১৮

যুব অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি আবু নাসের, সাধারণ সম্পাদক তুহিন 

১৯

প্রস্রাবে প্রোটিন গেলে কী করবেন

২০
X