বগুড়ার কাহালু উপজেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থান পাঁচপীর মাজার। এই পাঁচপীর মাজারে প্রতিদিন আসেন অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থী।
জানা গেছে, পাঁচপীর মাজারে যাওয়া ও আসার জন্য আগে ছিল না পরিবহন ও ট্রেন সুবিধা। ভক্ত ও দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে পাঁচপীর মাজার এলাকায় রেল স্টেশন স্থাপনের দাবিতে ১৯৭৮ সালের দিকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আন্দোলন শুরু করেন। ওই সময় সেই আন্দোলন দমাতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছিল। তারপরেও আন্দোলন দমাতে না পেরে ১৯৭৯ সালের দিকে ঐতিহাসিক পাঁচপীর মাজারের ১ কিলোমিটার পূর্বে পাঁচপীর মাজার রেলস্টেশন স্থাপন করা হয়।
সেখানে রেল স্টেশন হওয়ার পর গড়ে উঠে হাট-বাজারসহ বহু দোকানপাট। তখন থেকেই ট্রেনে চড়ে পাঁচপীর মাজারে অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থীদের যাতায়াত শুরু হয়। এখানে রেল স্টেশন হওয়ার পর থেকে ছিল প্রয়োজন মাফিক রেলের লোকবল। এখান থেকেই টিকিট কেটে ট্রেনে যাতায়াত করতেন মানুষজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আন্তঃনগর ট্রেন বাদে সব ট্রেনই এই স্টেশনে দাঁড়ালেও প্রায় ১০ বছর ধরে এই স্টেশনে নেই রেলেওয়ের কোনো লোকবল। ছোট একটি স্টেশন হওয়ায় লোকবলের অভাবে সেখানে বর্তমানে কেউ নেই। তালোড়া স্টেশন ও কাহালু স্টেশনের দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে ট্রেন চলাচলের সিগন্যালসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিদিন এখান থেকে গড়ে প্রায় হাজারের বেশি লোকজন ট্রেনে যাতায়াত করেন। এখানে স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে রেলের একজন লোকও না থাকায় যাত্রীদের নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়। আগে এখানে যাত্রীদের বসার জায়গা থাকলেও বর্তমানে তা আর নেই। স্টেশন মাস্টারের ঘরসহ সবই তালাবদ্ধ।
রেল স্টেশনের ঘরে এখন পোকা মাকড়ের বাস। ঘাস ও আগাছায় ছেয়ে গেছে স্টেশন ঘরের চারপাশ। এখানে ট্রেনে যাত্রী উঠানামা করলেও টিকিট কাটার কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে যারা ট্রেনে ওঠেন তাদের টিকিট কাটতে হয় ট্রেনের ভিতর অথবা অন্য স্টেশনে নেমে। ফলে এই রেল স্টেশন থেকে যারা ট্রেনে যাতায়াত করেন তাদের নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। অন্যদিকে এই স্টেশন থেকে ট্রেনের ভাড়া কোনো টাকা পাচ্ছে না রেল কর্তৃপক্ষ।
ঐতিহাসিক এই পাঁচপীর মাজার রেল স্টেশনে যাত্রীদের বিশ্রামাগার নির্মাণসহ স্টেশনের অবয়ব আগের মতো ফিরে আনার জোরালো দাবি জানান স্থানীয়রা।
মন্তব্য করুন