মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, কিশোরগঞ্জের হাওরে নির্মিত অলওয়েদার সড়কে পর্যাপ্ত কালভার্ট রাখা হয়নি। ফলে পানি ও মাছের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তার মতে, নতুন করে আরও অনেকগুলো কালভার্ট নির্মাণ করলে সড়কের সুবিধাও পাওয়া যাবে, আবার মাছ ও জীববৈচিত্র্যেরও ক্ষতি হবে না। কারণ, হাওরে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণের কারণে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন অডিটোরিয়ামে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার নিবন্ধিত মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, অলওয়েদার সড়ক আসলে হাওরের তিনটি উপজেলা—ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামকে সংযুক্ত করেছে। সড়কটি উঁচু করে নির্মাণ করা হলেও নিচ দিয়ে পানি প্রবাহের পথ সরু ও অপর্যাপ্ত। তাই মাছের প্রজনন ও পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে নতুন করে আরও কালভার্ট নির্মাণ জরুরি।
হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্টের পেছনে মানুষের দায় সর্বাধিক—এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, সব প্রাকৃতিক পরিবর্তন প্রকৃতির সৃষ্টি নয়, এর অনেক কিছুই মানুষের সৃষ্টি। প্রকৃত মৎস্যজীবী ছাড়া অন্য কাউকে হাওরের জলমহাল ইজারা দেওয়া যাবে না।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও বলেন, মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের কারণে হাওরে পানির পরিমাণ দিন দিন কমছে। ফলে দেশি প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তের পথে। জেলে সম্প্রদায় ও স্থানীয়রা বলছেন, হাওরে পানি নেই, দেশীয় মাছও নেই। মাছ না থাকায় জেলার হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন, কেউ কেউ হাওর ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছেন জীবিকার তাগিদে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রউফ। এ ছাড়া সহকারী পুলিশ সুপার সুবীর কুমার সাহা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মামুনসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শতাধিক নিবন্ধিত মৎস্যজীবী অংশ নেন।
মন্তব্য করুন