কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পপি আক্তার (৩৫) সম্প্রতি বাহরাইন থেকে দেশে ফিরেছন। স্বামী-সংসার নিয়ে সুখে থাকা পপি আক্তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন চাচার কাছে। প্রতিবাদ করায় হামলায় রক্তাক্ত হয়ে বিচার পাওয়ার পরিবর্তে উল্টো স্বামীকে নিয়ে জেল কেটেছেন তিনি। এখন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এমন অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
পপি আক্তার উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা মনিরাকান্দা গ্রামের নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মৃত সফির উদ্দিনের সন্তান। তিনি ৫ ভাই-বোনের মধ্যে বড়।
বক্তব্যে পপি আক্তার বলেন, ১৪ বছর আগে বাবাকে হারানোর পর পরিবারের হাল ধরতে ৭ বছর আগে গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে বাহরাইনে যাই। সেখানে থাকাকালে পরিবারের অভিভাবক হিসেবে প্রতিবেশী চাচা বাদল মিয়ার কাছে প্রবাসে উপার্জিত অর্থ ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে প্রায় ১১ লাখ টাকা পাঠাই।
তিনি বলেন, প্রবাসে থাকাকালে আরেক প্রবাসী ফরিদপুর জেলার মোশারফ শেখের সঙ্গে আমার পরিচয় ও বিয়ে হয়। স্বামীসহ দেশে আসার পর বাদল মিয়ার কাছে টাকা চাইলে ১১ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা চাওয়ায় চাচা বাদল মিয়া ও তার লোকজন আমাকে মারধর করেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় কামাল উদ্দিন ওরফে ভিপি কামালের কাছে গেলে তিনি বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
পরে ভিপি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে পপি আক্তার বলেন, ভিপি কামাল মামলা এফআইআর (নথিভুক্ত) করে দেওয়ার কথা বলে আমার কাছে ২৫ হাজার টাকা ও বাকি টাকা আদায় করার জন্য দেড় লাখ টাকা চান। মামলা নথিভুক্ত করার জন্য ২৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকা দিই ও দেড় লাখ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। দেড় লাখ টাকা না দেওয়ায় প্রতিপক্ষ বাদল মিয়ার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভিপি কামাল আমার ও আমার স্বামীর বিরুদ্ধে বাদলকে দিয়ে উল্টো মামলা করে আমাদের জেলে পাঠায়। এ মামলায় একমাস জেলে থাকার পর জামিনে বের হয়ে পুনরায় টাকা চাইতে গেলে হত্যা ও গুম করার হুমকি দিচ্ছে কামাল ও বাদলের লোকজন।
পপি আক্তার বলেন, বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসী ও সরকারের কাছে বিচার দাবি করছি।
অভিযোগের বিষয়ে ভিপি কামাল বলেন, এ বিষয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিষয়টি আমি জানলেও টাকা-পয়সা ও মামলার ব্যাপারে আমার জানা নেই। কিশোরগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনের মুহুরি (সহকারী) বোরহান উদ্দিন বিষয়টি দেখছেন। বোরহান উদ্দিন আমাকে সহায়তা করার জন্য ফোন করার পর না করে দিয়েছি। ১৫ হাজার টাকা বোরহান উদ্দিন নিয়েছেন। কাজ না হওয়ায় পরে টাকা ফেরত দিয়েছেন। এখন রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জালাল উদ্দিন ও তার লোকজন বিভিন্নভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযুক্ত বাদল মিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদেশ থেকে পপি আক্তার ৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা আমার কাছে পাঠিয়েছে। তার সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছে।
মন্তব্য করুন