রাশিয়ার ভূখণ্ডে ব্যাপক পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে ৩৬১টি ড্রোন নিয়ে এই হামলা চালানো হয়। টার্গেট ছিল লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের বিশাল কিরিশি তেল শোধনাগার, যেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যদিও এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর মেলেনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সব ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর সঙ্গে ৪টি গাইডেড বোমা এবং যুক্তরাষ্ট্রনির্মিত একটি হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্রও ধ্বংস করা হয়েছে। তবে হামলার সুনির্দিষ্ট ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তারা প্রকাশ করেনি।
লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার দ্রোজদেনকো জানিয়েছেন, কিরিশি এলাকায় অন্তত ৩টি ড্রোন ভূপাতিত হয় এবং সেগুলোর ধ্বংসাবশেষে আগুন ধরে যায়। পরে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের ড্রোন কমান্ড নিশ্চিত করেছে, কিরিশি শোধনাগারই ছিল তাদের লক্ষ্যবস্তু। তারা একে ‘সফল আঘাত’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে স্বাধীনভাবে ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করা যায়নি।
কিরিশিনেফতেওর্গসিনতেজ রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল শোধনাগার। সুরগুতনেফতেগাজের মালিকানাধীন এ স্থাপনাটির বার্ষিক পরিশোধন সক্ষমতা এক কোটি ৭৭ লাখ টন, যা দেশটির মোট উৎপাদনের প্রায় ৬.৪ শতাংশ। এ কারণেই শোধনাগারটিকে ইউক্রেনীয় হামলার একটি কৌশলগত টার্গেট হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন রাশিয়ার তেল শোধনাগার ও পাইপলাইনকে বারবার টার্গেট করছে। একইসঙ্গে রাশিয়ার কয়েকটি ড্রোন ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ডের আকাশেও ভূপাতিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে চাপে ফেলতে চান। শনিবার তিনি ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত। তবে এজন্য সব ন্যাটো সদস্যকে রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে হবে এবং একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৮ সালের মধ্যে তারা রুশ তেল ও গ্যাস আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, ইউরোপ যেন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের গতি আরও বাড়ায়।
সূত্র : রয়টার্স
মন্তব্য করুন