

বান্দরবানের থানচির নাফাখুম জলপ্রপাত এলাকায় তিন দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক পর্যটকের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষায়িত ডুবুরি দল।
রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ৪টায় পুলিশ ও বিজিবির সার্বিক সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিট ঝরনার গভীর পানির তলদেশ থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের মতে, নাফাখুম–আমিয়াখুমসহ থানচির জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতে প্রতিবছর পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নেটওয়ার্ক সুবিধা এবং অভিজ্ঞ গাইড ছাড়াই অনেক পর্যটক দুর্গম এলাকায় প্রবেশ করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
ফায়ার ডিফেন্স চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের স্টেশন অফিসার ডুবুরি দলের প্রধান রহিদুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) একটি পর্যটক দল ঢাকার ডেমরা থানার সারুলিয়া এলাকা থেকে আলীকদম হয়ে থানচির নাফাখুম ঝরনায় যান। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জলপ্রপাতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে যান ইকবাল নামের এক পর্যটক। অনেক চেষ্টার পরও ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পায়নি স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে রোববার সকাল থেকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আমরা তিনজনের একে একে অক্সিজেন লাগিয়ে মো. ইকবাল হোসেনের লাশ উদ্ধার করেছি।
উদ্ধারকারীরা আরও জানান, নাফাখুম এলাকার চারদিকে নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ ও সমন্বয় কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়া দুর্গম পাহাড়ি পথ, পাথুরে ধারা ও পানির তীব্র স্রোতের কারণে পুরো উদ্ধার অভিযান ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও টানা তিন দিনের চেষ্টায় নিখোঁজ পর্যটকের লাশ উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলা এবং গাইড ছাড়া এসব বিপদসংকুল এলাকায় না যাওয়া জরুরি।
থানচি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, উপপরিদর্শক মো. রিয়াজুলসহ ছয়জনের পুলিশের দল ইকবাল হোসেনের মরদেহ নিয়ে আসছেন। থানচি থেকে নাফাখুম যাতায়াতে পায়ে ট্রেকিং করে মোট ১০ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন হয়। আগামীকাল সকালে মরদেহটি স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হবে। নাফাখুমে নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি এবং পুলিশের সদস্যরা সমন্বিতভাবে উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা করছিলেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ -আল-ফয়সাল বলেন, ‘পর্যটকেরা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়নি। প্রশাসনে অনুমোদিত পথ প্রদর্শক গাইডও নিয়ে যাননি।’
জানা যায়, প্রশাসনিকভাবে কেবল তিন্দুতে বংড থেকে রাজা পাথর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করছে। রেমাক্রিখুম, নাফাখুমে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জায়গায় তারা কীভাবে গেলেন তা তদন্ত করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন