

কক্সবাজারের টেকনাফে সাগর পথে পাচারের সময় আটজন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় মানব পাচারকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
টেকনাফ (২ বিজিবির) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে বিজিবির-২ ব্যাটালিয়নের একটি বিশেষ দল সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকায় মানব পাচারবিরোধী এ অভিযান চালায়।
বিজিবি জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় সক্রিয় মানব পাচারকারী চক্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছিল। বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী চক্রের কয়েকজন পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন আসমা (১৯), শাবনূর (২০), জহুরা (৪৩) ও সাহারা খাতুন (৬২)। গ্রেপ্তার হওয়ারা সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি পাড়ার বাসিন্দা। পলাতক আসামির মধ্যে আছেন একই এলাকার আব্দুল মোতালেব ওরফে কালা বদ্দা (৩০)।
অভিযানে আটজন ভুক্তভোগীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ছয়জন নারী এবং দুই শিশু।
বিজিবি জানায়, তারা সবাই বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
উদ্ধারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিজিবিকে জানায়, পাচারকারীদের সহযোগীরা তাদের উচ্চ বেতনের চাকরি, সহজে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ আয়ের মাধ্যমে খরচ পরিশোধের প্রলোভন দেখায়। পরে সুযোগ বুঝে পাচারকারী চক্র তাদের বাড়ি বা নিরাপদ আশ্রয়ে আটকে রাখে এবং সাগরপথে পাঠানোর প্রস্তুতি নিত।
বিজিবি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি এলাকা দিয়ে পাচারের পথ কঠিন হয়ে পড়ায় চক্রটি এখন লোকালয় ব্যবহার করছে। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাচারকারীদের সক্রিয় নেটওয়ার্ক সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে বলে তারা জানিয়েছে।
টেকনাফ (বিজিবি-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘মানব পাচার সংঘবদ্ধ অপরাধ। সীমান্ত এলাকায় পাহাড় থেকে সমুদ্র—কোথাও অপরাধীদের জন্য নিরাপদ জায়গা থাকতে দেওয়া হবে না। পাচার প্রতিরোধে আমাদের নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাদের স্থানীয় থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। উদ্ধার হওয়া আটজনকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হবে। সীমান্ত সুরক্ষা ও মানব পাচার প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
মন্তব্য করুন