

দীর্ঘ ২৩ মাসের অচলাবস্থা শেষে অবশেষে গ্যাস সংযোগ ফিরে পেল দেশের অন্যতম বৃহৎ ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা (জেএফসিএল)।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত এ কারখানায় পুনরায় গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে। এতে কারখানা কর্তৃপক্ষ, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক, ডিলার এবং স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ও খুশির আমেজ ফিরে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কারখানার উপপ্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) ফজলুল হক গ্যাস সংযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন এ কারখানাটি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দৈনিক ১ হাজার ৭০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করলেও, গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও কারিগরি ত্রুটির কারণে তা বর্তমানে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে এসেছিল।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয় তিতাস। এ সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘ ২৩ মাস কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন জানান, গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ ছিল। ২৪ নভেম্বর থেকে পুনরায় গ্যাসের চাপ বাড়ানো হয়েছে। তবে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে কারখানার যন্ত্রাংশের কিছুটা মেরামত প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে প্রায় ২ সপ্তাহ সময় লাগবে।
যমুনা সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম তালুকদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। গ্যাস সংযোগ ফিরে আসায় সবার মধ্যে প্রাণচঞ্চলতা ফিরে এসেছে।’
তিনি এ জন্য বিসিআইসির চেয়ারম্যান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলাম এবং জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, এ কারখানা থেকে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ীসহ উত্তরবঙ্গের ১৯ জেলার প্রায় আড়াই হাজার ডিলার সার উত্তোলন করে থাকেন। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার কমান্ডিং এরিয়ায় সার সংকটের শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কারখানাটি পুনরায় চালু হওয়ায় সেই শঙ্কা দূর হলো বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন