

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে এনসিপি থেকে প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী ও দলটির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল সোহাগ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।
নাজমুল সোহাগ তার পোস্টে লিখেছেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় জাতীয় নাগরিক পার্টি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী একমাত্র মধ্যপন্থি রাজনীতির ভরসাস্থল ছিল। এই দল থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ আসন থেকে আমি মনোনীত প্রার্থী হই এনসিপির। তবে মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জানতাম না, এই দল মাত্র ৩০ সিটের জন্য আসন সমঝোতা করবে। আমি জানতাম ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে একক নির্বাচনের সিদ্ধান্তই অটুট থাকবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘যেহেতু এখন দলের পজিশন পরিবর্তন হয়েছে, তাই আমি নিজেকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করছি। নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করছি না। আমি এনসিপির স্বতন্ত্র শক্তিতে বিশ্বাসী। দলের প্রতি আমার কমিটমেন্ট আমি ভাঙি নাই। কিন্তু এই মুহূর্তে দলের প্রতি কমিটমেন্টের চেয়ে আমার গণঅভ্যুত্থানের প্রতি কমিটমেন্ট ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরও উল্লেখ করা হয়, ‘এনসিপি তার জন্মলগ্নে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছে গণতন্ত্রের সুষম চর্চা, নয়া বন্দোবস্ত, মধ্যপন্থা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা, সভ্যতাকেন্দ্রিক সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ এবং সর্বোপরি বাংলাদেশপন্থা নিয়ে। এই প্রতিটা শব্দ আমি আমার মনেপ্রাণে ধারণ করি, এই শব্দগুলো আমার রাজনৈতিক স্বপ্ন। এনসিপির ঘোষণাপত্র থেকে শুরু করে এর সবগুলো লিটারেচার এই বক্তব্য ধারণ করে৷ এনসিপি গঠনের সময় এটি ঠিক তাই ছিল যা আমি চেয়েছিলাম।’
‘২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ঠিক ১০ মাস পর ১০ দলীয় জোটে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমি মনে করি এনসিপির সর্বোচ্চ নেতারা এবং নীতিনির্ধারকরা নিজেরাই এনসিপির মূল বক্তব্য থেকে চ্যুত হয়েছেন। সুতরাং আমার করা ও বলা প্রত্যেকটি কাজের দায় তাদের।’
‘আমি কিছুদিন আগে ক্রাউড ফান্ডিং করে নির্বাচনের অনুদান নিয়েছি। আমাকে যারা অনুদান দিয়েছেন, তারা এনসিপির স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অবস্থান দেখে ডোনেট করেছেন। যারা নিজেদের ডোনেশন ফেরত চান, তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা। সেই সংখ্যাটা ১ জন হলেও আমার দায়বদ্ধতা হলো, অনুদানের অর্থ ফেরত দেওয়া। আমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনুদানের অর্থ ফেরত দেব; যারা যে মাধ্যমে পাঠিয়েছে, যারা আমাকে অনুদান দিয়েছেন, আমার পাশে থেকেছেন, অনেক আশার কথা লিখেছেন, তাদের এই মুহূর্তের জন্য হতাশ করার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। তবে জানবেন, আমি ক্ষমতার রাজনীতি করতে আসি নাই।’
‘রাজনীতি পরিবর্তনের বয়ান দিয়ে সিট ভাগাভাগি করে ক্ষমতায় যেয়ে নিজেদের দলের প্রতি, মানুষের প্রতি বেইনসাফি করব না। জনতার কথা ও নতুন রাজনীতির কথা আপনাদের হয়ে বলতে থাকব ইনশাল্লাহ।’
‘আমি দল থেকে পদত্যাগ করার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এনসিপি কারও একার সম্পত্তি না। এনসিপি যতখানি শীর্ষ নেতৃত্বের, তার থেকে অনেক বেশি আমার। আজ পর্যন্ত এমন কিছু বলি নাই বা করি নাই যাতে আমার দল বিতর্কিত হয়। আমাদের শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের প্রতি লাখো কুটি সালাম ও শ্রদ্ধা।’
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল সোহাগ বলেন, ‘দল থেকে প্রাথমিকভাবে আমাকে মনোনীত করেছিল। তাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মাঠে কাজ করেছি। কিন্তু এরই মধ্যে দলের জোটগত কারণে এ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম।’
মন্তব্য করুন