কেন্দ্রীয় বিএনপি আয়োজিত বরিশালের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নেতাদের সামনে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুকের গায়ে ধাক্কা দিয়ে সম্মেলনস্থল থেকে বেরিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির নগরীর সদর রোডে দলীয় কার্যালয়ে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির বিভাগীয় রোডমার্চ কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আগে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে বসার জায়গা নিয়ে নগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ায় নান্নু। এমন ঘটনায় সাংবাদিকদের সামনে বিব্রতবোধ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতারা।
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় রোডমার্চের নেতা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, রোডমার্চের দলনেতা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিছ আক্তার জাহান শিরিন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুলহোসেন খান ও সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহীন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্যসচিব মীর জাহীদুল কবির জাহীদ, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক দেওয়ান মোহাম্মাদ শহীদুল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সভাপতি ও সম্পাদকরা।
ইতোপূর্বেও দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে মাহাবুবুল হক নান্নুর অনেক নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার দৃশ্যমান কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও বেশ আয়েশি জীবন কাটান তিনি। এসব নিয়েও দলের মধ্যে রয়েছে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু বলেন, কোনো গণ্ডগোল হয়নি। প্রোগ্রাম শুরু হতে দেরি হওয়ায় চুল কাটতে চলে আসছি। কারণ আমি নাপিতকে বসিয়ে রেখেছি। চলে আসার সময় আমাকে কে যেন থামাল। আমি তাকে বলে এসেছি যে, আমার কাজ আছে। তাদের তো বলা যায় না চুল কাটতে যাব। ভাইয়ে ভাইয়ে এমন হয়। জাহিদের সঙ্গে আমার কিছু হয়নি, কারও সঙ্গেই কিছু হয়নি।
মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, প্রোগ্রামে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আবুল হোসেন খান ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক প্রধান অতিথির চেয়ারের উত্তর পাশে বসেছেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহিনসহ আমরা বসছি দক্ষিণ পাশের দর্শক সারিতে। কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বসেছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খানের পাশে। এর মধ্যে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ চলে আসছেন। সাধারণত আহ্বায়করা প্রধান অতিথির পাশের চেয়ারের সাড়িতে একসঙ্গে বসেন। তখন নান্নু বলেন, ওই পাশে বসলে অসুবিধা কি। তারপর মিটিং আছে বলে নান্নু চলে গেছে। কিছুই হয়নি।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, কিছুই হয়নি। বসা নিয়ে একটু কথাকাটাকাটি হয়েছে। এটা নিজস্ব ব্যাপার। পরে তাদের মিলিয়ে দিয়েছি।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, এক ঘরের মধ্যে থাকলে ভাই ভাইয়ের মধ্যে এরকম ঘটনা হতেই পারে। এটা তেমন কিছু নয়।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় আমাদের মধ্যে মতানৈক্য হতেই পারে। এটা কোনো নতুন জিনিস না। আজকে আমরা একসঙ্গে থাকি। এক সময় না হয় ওর কথা পছন্দ হলো না। বিষয়টি ওখানেই শেষ হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন