৫ মাসের অধিক সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ। সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি, দরগাহপুর ইউনিয়নের সংযোগস্থলে ধাপুয়া খালের ওপর ব্রিজটি অবস্থিত।
ধাপুয়া খালের এ ব্রিজটি আশাশুনির কুল্যা থেকে বাঁকা সড়কে হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। ব্রিজটি শুধু দুই ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে তা নয়, আশাশুনি উপজেলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পাইকগাছা ও তালার উপজেলার সঙ্গেও যোগাযোগের অন্যতম সড়কে এর অবস্থান।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীসহ শত শত যানবাহন চলাচল করে। অথচ ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকে ৫ মাসের অধিক সময়েও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। তাই প্রতিনিয়তই হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সাতক্ষীরার অধীনে ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২,৯৩,৫৮,৬৮৮ টাকা। প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রোলার ব্রিজ (এসইউপিআরবি) প্রকল্পের আয়তাধীন এই ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু গত বছরের ১৪ এপ্রিল। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের (আইডিএ) অর্থায়নে ও এলজিইডির বাস্তবায়নে নির্মিত ওই ব্রিজের ওপর দিয়ে তালা, পাইকগাছা, কয়রা হয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় যাতায়াত করে থাকে।
ধাপুয়া খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটি ডালাই দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা অ্যান্ড ড্রেসিং সলিউশন কাজ বন্ধ রেখেছে। চলাচলের জন্য আলাদা বাইপাস সড়কের ব্যবস্থা করলেও বৃষ্টির পানিতে তা ভেঙে গেছে। ফলে সড়কটি গাড়ি চলাচলের জন্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এ জন্য সড়কে দুর্ভোগের সঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
সরজমিনে দেখা যায়, ব্রিজটি মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন করে নির্মাণকাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা অ্যান্ড ড্রেসিং সলিউশন (জেভি)। কাজের সিডিউল অনুসারে চলতি বছরের ১৩ মে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কাজ শেষ না করে বন্ধ রয়েছে প্রায় ৫ মাসেরও অধিক সময়। যাতায়াতের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে দিলেও গত ৬ দিনের বৃষ্টিতে পুরো রাস্তা ভেঙে চলে গেছে ধাপুয়ার খালে। ফলশ্রুতিতে পুরোপুরিই বন্ধ হয়ে গেছে গাড়ি চলাচল।
অন্যদিকে পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশ আর কাঠের সাঁকো। এতে হাজারো মানুষের দুর্ভোগের যেন অন্ত নেই। যানবাহন চলাচল না করায় সাধারণ মানুষকে ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা।
আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলী নাজিমুল হক জানান, ‘বৃষ্টির পানির কারণে বিকল্প রাস্তাটি ভেঙে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এ ব্রিজের কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলে ও পানি কমে গেলেই দ্রুত সময়ে কাজ ধরা হবে। বিকল্প যে রাস্তাটি ছিল বৃষ্টির কারণে ভেঙে গেছে। ব্রিজের ঢালাইয়ের সব যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। আশা করছি, এক মাসের মধ্যেই ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ হবে।’
মন্তব্য করুন