হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা হতদরিদ্র রোগীদের কাছ থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক উন্নয়নের নামে দানবাক্স বসিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ উঠেছে পৌর শহরের আজমিরীগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সুব্রত কুমার হালদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
এমনকি হতদরিদ্র রোগীরা ওষুধ আনতে ক্লিনিকে গেলে টাকা দানবাক্সে ফেলার পরই ওষুধ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি বাধ্যতামূলক নয়। যাদের দেওয়ার ইচ্ছা হবে তারাই দিবে। আর ভুক্তভোগীরা বলছেন, ওষুধ আনতে গেলেই দিতে হয় পাঁচ থেকে দশ টাকা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রান্তিক হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ওষুধ সরবরাহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়াও হতদরিদ্র রোগীদের জন্য একজন করে হেলথকেয়ার প্রোভাইডার দায়িত্বে রয়েছেন প্রতিটি ক্লিনিকে। গড়ে প্রতিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন অন্তত শ'খানেক রোগী সেবা নেন। সরেজমিনে পৌরসভার আজিমনগরে আজমিরীগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ‘দানবাক্স আজমিরীগঞ্জ সিসি’ লেখা একটি কাঠের বাক্স ঝোলানো রয়েছে। সেখানেই সেবা নিতে আসা রোগীরা ওষুধ নেওয়ার বিনিময়ে টাকা দিচ্ছেন।
এ সময় ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা মোছা. নুফুরউন আক্তার নামে এক সেবাগ্রহীতা ১০ টাকা দানবাক্সে দিচ্ছেন দেখে টাকা কেন ঢালছেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তারা বলছে টাকা দিতে তাই টাকা দিচ্ছি । এক পাতা প্যারাসিটামল ও কিছু আয়রণ ট্যাবলেট দিয়েছে তারা।
পৌর এলাকার ইলামনগরের বাসিন্দা নাসু মিয়া নামের এক সেবাগ্রহীতা জানান, ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকলেও দানবাক্সে টাকা না দিলে ওষুধ মিলে না। টাকা দিয়েই ওষুধ নিয়েছি।
ক্লিনিকটিতে দায়িত্বে থাকা সুব্রত হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশে দানবাক্স দেওয়া হয়েছে। ক্লিনিকের উন্নয়নের জন্য স্বেচ্ছায় সেবাগ্রহীতারা যা ইচ্ছা তা দানবাক্সে দান করেন। টাকা ছাড়া ওষুধ না দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওষুধ সবাইকে বিনামূল্যেই দেওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আজমিরীগঞ্জ সিসি বলেন কিংবা বাংলাদেশের যে কোনো ক্লিনিক বলেন, এটা পাবলিক সরকার সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠান। এখানে ৫০ জন কিংবা ১০০ জন সেবাগ্রহীতারা সেবা নেন। তারা স্ব-ইচ্ছায় যা দান করবেন তা দিয়ে ক্লিনিকের টুকটাক উন্নয়ন কাজ হবে। তবে টাকা দিতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
ক্লিনিকে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর লোকজন স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে টাকা দিয়ে সেবা নিবেন কেন- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে বাধ্যতামূলক তো কিছু না। যদি ক্লিনিকটিতে এমন হয় তবে ওই ক্লিনিকে কর্তব্যরত প্রোভাইডারকে আমি বিষয়টি জিজ্ঞেস করব৷
মন্তব্য করুন