মানিকগঞ্জের ঘিওরে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী সম্প্রীতির মেলা। ২শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় হাজারো মানুষের আগমনে পরিণত হয়েছে মিলনমেলা। আয়োজকদের দাবি সারাদেশের মধ্যে একমাত্র ঘিওর উপজেলাতেই বিজয় দশমী উপলক্ষে এত বড় সম্প্রীতির মেলা লেগে থাকে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘিওর ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে শুরু হয় মেলা। চলবে বুধবার পর্যন্ত। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও উপস্থিতিতে প্রতিবছর সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে উদযাপিত হয় মেলাটি। স্থানীয়দের কাছে সম্প্রীতির এই মেলা বিজয়া দশমীর মেলা হিসেবেও পরিচিত।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত সরকার (গবিন্দ) জানান, প্রায় ২০০ বছর ধরে আশপাশের সব দূর্গা মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের আগে পুরোনো ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে স্কুলের মাঠে জড়ো করা হয়। পুরো মাঠ ভরে যায় প্রতিমায়। শেষবারের মতো দুর্গা দেবী দর্শন করতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভিড় করেন।
সরেজমিনের দেখা যায়, ওইদিন সন্ধ্যার পর প্রতিমা বিসর্জনের আগে হিন্দু নারীদের উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। প্রতিমা বিসর্জনের পর মুহূর্তেই আনন্দ আর গানবাজনার মূর্ছনায় মেতে ওঠেন নারী-পুরুষ,শিশুসহ হাজারো মানুষ। মেলায় অন্য ধর্মের মানুষেরও ঢল নামে। ধর্মীয় সম্প্রীতির এ উজ্জ্বল নজিরের ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী রামপ্রসাদ সরকার দিপু বলেন, প্রায় ২শত বছর ধরে এ মেলা হয়ে আসছে। বিজয়া দশমীর দিন সব ধর্মের মানুষ মেলার আনন্দ উপভোগ করতে সমবেত হন এ স্কুলের মাঠে। রাতে একযোগে উপজেলা সদরের সব মণ্ডপের প্রতিমা ধলেশ্বরীর জলে বিসর্জন দেওয়া হয়।
ঘিওর থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রীতির এক উজ্জল স্বাক্ষ এ মেলা। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই মিলে এক প্রাণে মিশে। পুরো অনুষ্ঠানটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বক্ষণিক দেখভাল করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন মিলনমেলা সত্যিই বিরল। ধর্মের বিভেদ, বিভাজন কোনোদিনই এ মেলার সর্বজনীনতায় দেয়াল তুলতে পারেনি।’
মেলায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুস সালাম, ঘিওর থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান আলাই, ঘিওর ইউপি চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল প্রমুখ।
মন্তব্য করুন