আব্দুর রশিদ, হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হরিপুরে শতাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকার উৎস্য পানি মুথা

হরিপুরের আমগাঁও গ্রামের নন্দন কুমার পাটির বুনার জন্য পানি মুথা সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরছেন এক শ্রমিক। ছবি : কালবেলা
হরিপুরের আমগাঁও গ্রামের নন্দন কুমার পাটির বুনার জন্য পানি মুথা সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরছেন এক শ্রমিক। ছবি : কালবেলা

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে শতাধিক পরিবারের জীবন জীবিকা চলে পানি মুথা নামে এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি পাটি বিক্রি করে। পাটি তৈরির মূল উপকরণ মেলে মুথা সংকটের কারণে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে পানি মুথা। এসব জলজ উদ্ভিদ জন্মায় খাল-বিল ও জলাশয়ে। কৃষকের নিকট থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনে নিতে হয় এসব পানি মুথা। তা দিয়ে মাদুর বা পাটি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে সুখে দুঃখে চলে তাদের জীবন জীবিকা। আর এ শিল্পকে পুঁজি করেই চলে তাদের জীবন।

জানা যায়, পানি মুথা দিয়ে তৈরি পাটি অন্যান্য পাটির চেয়ে দামে সস্তা হলেও শয্যা হিসেবে অনেক আরামদায়ক ও শীতল। হরিপুর উপজেলার আমগাঁও, যামুন, মশালডাঙ্গী ও আট ঘরিয়া গ্রামে ৪০ বছর পূর্ব থেকে শুরু হয়েছে মেলে মুথা দিয়ে পাটি তৈরির কাজ। কিন্তু দিন দিন মেলে মুথা বিলুপ্ত হওয়ায় জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য ও এ শিল্পকে বাঁচাতে বিকল্পভাবে পানি মুথা নামে এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ (ঘাস) দিয়ে ৮-১০ বছর থেকে শুরু করেছে পানি মুথা দিয়ে পাটির বুনার কাজ। এই কাজের মাধ্যমে অনেকে খুঁজে পেয়েছে তাদের চলার পথ। পাটি বিক্রির উপার্জিত অর্থ দিয়ে চলছে এসব পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়াসহ সংসারের ভরণ পোষণের খরচ।

এলাকাবাসী জানান, পানি মুথা ঘাস জাতীয় এক শ্রেণির জলজ উদ্ভিদ খাল, বিল ও নুনার জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়। প্রতি বছর ভাদ্র-আশ্বিন মাস থেকে সংগ্রহ করা হয়।

পাটি তৈরির কারিগর জানান, মুথা কাটার পর পাটি তৈরির জন্য রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। বাড়িতে শান মেশিনে পাটের চিকন দড়ির সাহায্যে পাটি বানানো হয়। এতে দুজন শ্রমিক বা কারিগরের প্রয়োজন হয়। আর এভাবেই পাটি তৈরি করে বাজারজাত করা হয়।

যামুন গ্রামের শ্রী নন্দন চন্দ্র জানান, আগে নিজে আবাদ করে মেলে মুথা দিয়ে পাটি তৈররি করতাম কিন্তু দিন দিন সার বিষসহ মুথা আবাদের সব কিছু দাম বেশি হওয়ার ফলে মেলে মুথার চাষে অনেকই আগ্রহ হারিয়ে ফেলার কারণে বিলিনের পথে এ শিল্পের প্রকৃত উপকরণ। তাই জীবন সংসার বাঁচাতে আমরা প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া পানি মুথা দিয়ে পাটি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করি। একটি বড় মাপের মাদুর তৈরিতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। মাঝারি ও ছোট আকারের পাটিতে খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বড় পাটি বাজারে বিক্রি করি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি পাটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এটি একটি প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্প। এই শিল্পকে বাচাঁতে ও তাদের সহযোগিতা জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফুটপাতে জন্ম, নবজাতক রেখে চলে গেলেন মা

প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকার : দুই জেলের কারাদণ্ড

বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল ইংল্যান্ড, দেখে নিন একাদশ

জবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যান্টিন স্টাফদের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ারের জার্সি উপহার 

স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক এমপি সামছুল আলমের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা 

বাথরুমে একদম খোলামেলা গোসল করেন? হতে পারে যে ৩ বিপদ

শোবিতাকে ছাড়া বাঁচতে পারি না : নাগা চৈতন্য

চাঁদাবাজবিরোধী অভিযানে গিয়ে আহত ৩ পুলিশ সদস্য

হেলিকপ্টারে এসে প্রার্থিতা ঘোষণা করলেন প্রবাসী

ইসফাকের জায়গায় বিসিবি পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা

১০

আগামী ৫ দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল অধিদপ্তর

১১

শ্বশুরবাড়িতে গাছে ঝুলছিল জামাইয়ের মরদেহ 

১২

হিসাবরক্ষণ পদে নিয়োগ দিচ্ছে আড়ং

১৩

ইরানের হাতে আসছে ‍রুশ অস্ত্র, মধ্যপ্রাচ্যে কী হতে যাচ্ছে?

১৪

নারী বিশ্বকাপের জন্য ২১ সদস্যের দল ঘোষণা ব্রাজিলের

১৫

‘সহজক্যাশে’ লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কবার্তা

১৬

রেড ক্রিসেন্টে চাকরির আবেদন করুন অনলাইনে

১৭

মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে সেই ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

১৮

অভিজ্ঞতা ছাড়াই নিয়োগ দিচ্ছে আরএফএল

১৯

ফের মা হতে চলেছেন ভারতী সিং

২০
X