শীতের শুরুতেই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ফসলের মাঠজুড়ে দেখা যায় সরিষা ফুলের হলুদ বর্ণের সমারোহ। এই সরিষা ফুল নিয়ে কবিদের হাজারও কবিতা।
শীত মৌসুম আসতে না আসতেই প্রকৃতিপ্রেমীরা ডুবে যায় সরষে ফুলের সৌন্দর্যে। শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়েসের নারী-পুরুষ এই সরিষা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নেমে পড়ে ফসলের মাঠে। শহর থেকে অনেক প্রকৃতিপ্রেমী দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন গ্রামের মাঠে ঘাটে।
এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে সবে মাত্র উঁকি দিচ্ছে সদ্য ফোটা সরিষা গাছের হলুদ বর্ণের ফুল। আর এই সরিষা ফুলের সঙ্গেই যেন মিশে আছে হাজারও কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। চলতি রবি মৌসুমেও সরিষা চাষে লাভের স্বপ্নে বিভোর উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বারি-১৪ ও বারি-১৫ সহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই কম বেশি সরিষার চাষ করা হয়েছে। উন্নত জাত ও দেশীয় জাতের রাই, চৈতা ও মাঘি সরিষার বীজ বপন করছেন কৃষকরা। তবে প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে উন্নত জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৫ ফলন বেশি হওয়ায় এ দুই জাতের সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী বলে জানান কৃষকরা।
উপজোলার দুর্গম চরাঞ্চল আজিমনগর এলাকার এনায়েতপুরের নাসির উদ্দীন জানান, আমাদের চরাঞ্চলে সরিষার চাষ বেশ ভালোই হয়। এই সরিষা ফুলের দৃশ্য দেখতে জেলা শহর থেকে অনেক প্রকৃতিপ্রেমী এই চরাঞ্চলে আসেন। আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত গাছের অবস্থা বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তাহলে ভালো ফলনের আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, শীত মৌসুম আসলেই শহর থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা গ্রামে ছুটে আসেন। এশীত মৌসুমে সরিষা ফুল ফুটলেই তারা আসেন। এটা বেশ ভালো। শহরের যান্ত্রিক জীবনযাপন ভেদ করে কিছুটা সময় হলেও শেকড়ের গন্ধ পান তারা। মিশে যান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের মাঝে। এ উপজেলায় বিগত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার আবাদ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরিষার চাষ আরও বৃদ্ধি করার জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন