ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটের প্রায় এক কিলোমিটার পাড় এলাকা নাব্য হারিয়ে নৌযান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শুস্ক মৌসুম শুরুর পর থেকে গত ১৫ দিন ধরে পানি শুকিয়ে ওই ঘাটে লঞ্চ ও স্পিডবোট ভিড়তে পারছে না। ফলে প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাগামী উপজেলার হাজার হাজার লঞ্চ যাত্রী নামানো হচ্ছে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের বালুচরে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এই নৌরুটের যাত্রীরা।
জানা যায়, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর-মৈনট পদ্মার ঘাট দিয়ে আশপাশের পাঁচটি উপজেলার যাত্রীরা প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে থাকেন। এ নৌরুটের যাত্রীরা স্পিড বোট ও লঞ্চে খুব অল্প সময়ে পদ্মা নদী পাড় হয়ে দোহার উপজেলা দিয়ে ঢাকা যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু চলতি শুষ্ক মৌসুম শুরু থেকে উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাট পয়েন্টে বিশাল চর পড়ে নৌযান চলাচল অয্যোগ্য হয়ে রয়েছে। ফলে নাব্যতা সংকটে গোপালপুর ঘাট থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তর দিকের উজানে পদ্মা নদীর হাজিডাঙ্গী গ্রামের বালুচরে প্রতিদিন হাজার হাজার লঞ্চ যাত্রী নামানো হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা এবং প্রতিদিন মোটা অঙ্ক লোকসান গুনছেন বলে লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন।
উপজেলার গোপালপুর ঘাট ঘুরে জানা যায়, উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাট পার থেকে পূর্ব দিকে প্রায় এক কিলোমিটার পদ্মার পার এলাকাজুড়ে বালুচর পড়ে রয়েছে। ফলে এ ঘাটে লঞ্চ ভিড়তে না পেরে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তর দিকের উজানে পদ্মা নদীর হাজিডাঙ্গী গ্রামের বালুচরে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা থেকে ফেরত যাত্রীরা শিশু, বৃদ্ধ ও ব্যাগ ব্যাগেজ নিয়ে বালুচর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ঢাকা থেকে আসা একযাত্রী মারুফা আক্তার (৪১) জানায়, নাব্য সংকটে মেনট থেকে লঞ্চে উঠে পদ্মা নদী পার হতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লেগে গেছে। আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগার পরও নামিয়ে দেওয়া হয়েছে দেড় কিলোমিটার দূরের বালুচরে। তিনি আরও জানান, আমার সাথে দুটি শিশু সন্তান ও ব্যাগ ব্যাগেজ নিয়ে উপজেলার প্রধান সড়কে পৌঁছানো খুবই কষ্ট হচ্ছে।
আরেক যাত্রী জব্বার ফকির (৫০) বলেন, এ নৌরুটের যাত্রীরা গত ১৫ দিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শুধু শুনতেছি গোপালপুর ঘাটের কিছু অংশ নৌ চলাচলের জন্য ড্রেজিং কাজ শুরু হবে কিন্তু কাজ তো শুরুই হচ্ছে না। ওই লঞ্চ ঘাটের টিকিট মাস্টার মো. মোক সেদুর রহমান জানান, অত্র ঘাটটি ড্রেজিং না হওয়াতে আমাদের যাত্রী একবারেই কমে গেছে এবং প্রতিদিন আমরা হাজার হাজার টাকা লোকসান গুনছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী মোর্শেদ বলেন, আপাতত লঞ্চ ও স্পিটবোর্ড চলাচলের জন্য পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটে ড্রেজিং করে একটি ক্যানেল করা হবে। খুব শিগগিরই বিআইডব্লিউটিএ ওই নৌরুটটি চালু রাখতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করবেন।
এ বিষয়ে শিমুলিয়া বিডাব্লিউটির নৌবন্দর কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি ঊর্ধ্বতনদের লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যেই খনন কাজের জন্য সংশ্লিষ্টরা ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। খনন যন্ত্র আসার পরবর্তীতেই যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন