প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজশাহী ও দিনাজপুরের তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য এবং অন্যজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা দায়েরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- এএসআই গোলাম রাব্বানী, পুলিশ সদস্য আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল।
এরমধ্যে আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে আর এএসআই গোলাম রাব্বানী দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃত শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার হাজরাপাড়া গ্রামের মো. আসাদ আলীর ছেলে, আবদুর রহমান চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার যাদুপুর গ্রামের মো. আব্দুল হানিফের ছেলে। আর গোলাম রাব্বানী রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অনন্তরাম গ্রামের বাসিন্দা মৃত নেছাব উদ্দিনের পুত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার আগে পুলিশের এই সদস্যরা ১৫-২০ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেন। এ জন্য তাদের প্রত্যেককে খুবই ছোট আকারের হেডফোন সরবরাহ করেন। এ যন্ত্রের সাহায্যে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের সব উত্তর বলে দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য একেক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার চুক্তিসহ তাদের কাছ থেকে চেক ও স্ট্যাম্প নেওয়া হয়। পুলিশের অভিযানে কিছু স্ট্যাম্প, একটি ১০ লাখ টাকার চেক এবং ১৪টি গোপন ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার আগের রাতে এই পুলিশ সদস্যদের এমন তৎপরতার বিষয়ে জানতে পেরে প্রথমেই আরএমপি সদর দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল ও আবদুর রহমানকে আরএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা আটক করে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের নগর ডিবি পুলিশের কার্যালয়েই রাখা হয়। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানা থেকে এএসআই গোলাম রাব্বানীকে আটক করা হয়। এ চক্রের সঙ্গে আর কে কে জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ও মুখপাত্র মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের প্রতারণার চেষ্টার অভিযোগে কারিমা খাতুন নামের এক ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী শনিবার সন্ধ্যায় ৫ জনকে আসামি করে রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুই আসামিকেও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন