শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। সারা বছরের ন্যায় এ মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রম। জিনিসপত্রের বাজার দর ঊর্ধ্বমুখি হওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের। ঠিক সে সময়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন এরশাদ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি রমজান মাসজুড়ে ১০ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছেন।
মো. এরশাদ উদ্দিন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর রৌহা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, চার বছর আগে এরশাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় জে সি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণের তিন শতাধিক গরু রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে ২৫টি গরু দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন খামার থেকে ৭০-৭৫ কেজি দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতি রমজান মাসে সাধারণ মানুষের পুষ্টি চাহিদার কথা মাথায় রেখে নাম মাত্র মূল্য ১০ টাকা কেজিতে দুধ বিক্রি করে আসছেন তিনি।
রমজানের প্রথমদিন থেকেই প্রতিদিন সকাল ১১টায় খামার থেকে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করা হয়। যেখানে নিজ এলাকা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিম্ন আয়ের মানুষজন দুধ নিতে আসেন। সাধারণত বাজারে প্রতি লিটার দুধ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। যে কেউ তার খামার থেকে মাত্র ১০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ১ কেজি দুধ কিনতে পারবেন। কম দামে দুধ নিতে পেরে খুশি সাধারণ মানুষ।
নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দেওপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, বাজারে সবকিছুরই মূল্য অনেক। রমজানে ১২০ টাকা লিটার করে দুধ কিনে খাওয়া আমাদের সম্ভব না। এরশাদ ভাই ১০ টাকা করে দুধ দিচ্ছে। এই দুধ দিয়েই আমরা সেহরি খাব। আমাদের সকল বিপদেই এরশাদ ভাই পাশে থাকেন।
এরশাদ উদ্দিন জানান, রমজান আসলেই এলাকায় দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। হাট-বাজারগুলোতে এক কেজি দুধ ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১২০ টাকা দামে নিম্নবিত্ত মানুষ ক্রয় করে খাওয়ার ক্ষমতা নেই। এ বিষয়টা চিন্তা করেই তাদের জন্য নামমাত্র ১০ টাকা মূল্যে ৭০ জনকে ১ লিটার করে দুধ দিয়েছি। প্রথম রমজান থেকে এ কার্যক্রম শুরু শুরু হয়েছে চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত।
তিনি আরও বলেন, পুরো রমজানে আমার খামারে যা দুধ উৎপাদন হবে সবই ১০ টাকা করে বিক্রি করা হবে। সেই হিসেবে এ রমজানে ২ টন দুধ ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে। সে হিসেবে দৈনিক ৭০ থেকে ৭৫ জন ১০ টাকা দরে দুধ কিনতে পারবেন।
মন্তব্য করুন