প্রেম মানে না কোনো বাধা, কোনো সীমানা। প্রেমের টানে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে প্রায় প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে ছুটে আসছেন ভিনদেশি তরুণ-তরুণী। এবার প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে ছুটে এসেছেন সেদেশের নাগরিক সাউই চুই (২৮)।
গত ৩০ জুন ঢাকায় বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে মেয়ে ফারিয়া সুলতানা মুনের (২০) সঙ্গে চীনা নাগরিক সাউই চুই বিয়ে সম্পন্ন হয়।
এরপর সোমবার (১০ জুলাই) চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে নিজেদের বাড়িতে স্বামীকে নিয়ে আসেন ফারিয়া সুলতানা। সাউই চুই এখানে তিন দিন থেকে বুধবার (১২ জুলাই) রাতে ঢাকা ফিরেছেন।
ফারিয়া সুলতানা জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে চীনা যুবক সাউই চুইয়ের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে পরিচয় হয় জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের দিনমজুর শফিকুল ইসলামের মেয়ে ফারিয়া সুলতানা মুনের। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনের মধ্যে প্রায় সাত থেকে আট মাস উইচ্যাটের মাধ্যমে কথোপকথন হয়। এক সময় চীনা যুবক মুনকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি দুজনের পরিবারও জানতো। এরই একপর্যায়ে সাউই চুই চীন থেকে ঢাকায় এসে ফারিয়ার সঙ্গে দেখা করেন এবং ঈদুল আজহার পর দিন ওই চীনা নাগরিকের বোনের উপস্থিতিতেই তাদের বিয়ে হয়।
প্রতিবেশীরা জানায়, অন্য সব বিয়ের চেয়ে এটি ছিল ভিন্ন একটি বিয়ে। কারণ ভিনদেশি ছেলে আর দেশি মেয়ের বিয়ে। আনন্দ ও উল্লাস ছিল আলাদা। আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষ বিদেশি জামাইকে দেখার জন্য ভিড় করে।
মুনের মা আন্জুরা বেগম বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে আমার মেয়ের সঙ্গে চীনের ওই ছেলের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর ওই ছেলে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাইলে আমরা তাকে আমাদের দেশে আসতে বলি এবং দেশের সব আইন মেনে দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতে পারিবারিকভাবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। জামাই অনেক ভালো ও শান্ত স্বভাবের। আমার মেয়েকে জামাই চীনে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন।
চার নম্বর সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাবুল ইসলাম মিল্টন মোল্লা বলেন, চীন থেকে এক যুবক গয়েশপুর গ্রামে হতদরিদ্র পরিবারের একটি মেয়েকে ইসলামিক শরিয়তের মাধ্যমে বিয়ে করেছে। এটা আমি শুনেছি এবং তাকে দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে মানুষ ভিড় করছে। মেয়ের পরিবারটি অন্তত দরিদ্র। তাদের পরিবার আর্থিকভাবে উন্নত হোক এবং তারা সুখে থাকুক, এটা কামনা করি।
তিনি আরও বলেন, গতকাল রাতে ট্রেনযোগে তারা ঢাকার উদ্দেশে গেছে। চলে যাওয়ার কারণ, এটি একেবারেই গ্রাম এখানে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় সে তার পরিবারকে নিয়ে চলে গেছে বলে জানতে পেরেছি।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, চীনের এক নাগরিক জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে এসে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে বলে শুনেছি। তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
মন্তব্য করুন