পবিত্র মাহে রমজানে বাজারের অস্থিরতা কমাতে পেঁয়াজ, আদা, বেগুন, কাঁচামরিচ, ছোলা, মুরগিসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। কিন্তু সরকারের বেঁধে দেওয়া সেই দামে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কোথাও মিলছে না পণ্য। এতে হতাশ সাধারণ ভোক্তারা। এমন পরিস্থিতিতে শিগগিরই অভিযান শুরুর কথাও বলছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
জানা যায়, গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। শনিবার (১৬ মার্চ) মাঠ পর্যায়ে তা তদারকি করতে সরকারি কোনো সংস্থার কার্যক্রম চোখে পড়েনি। এ কারণে আগের বাড়তি দামেই পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভোক্তারা।
গতকাল নগরের কাজীর দেউরি বাজারে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০ টাকা এবং সোনালি মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা। তবে সরকারিভাবে ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬২ টাকা।
শুধু এই বাজারেই নয়, নগরের বহদ্দারহাট, দুই নম্বর গেট, চকবাজারসহ চট্টগ্রামের বেশিরভাগ বাজারেই এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে। সরকার নতুন দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ৬০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও এখনও বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। সরকার রমজানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছোলার দাম প্রতিকেজিতে ৯৮ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে এখনও বাজারে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১১০-১২০ টাকা। প্রতিকেজি আলুর দাম নির্ধারণ করেছে ২৮ টাকা। তবে বাজারে এক কেজি আলু কিনতে ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এভাবে প্রতিটি পণ্যই বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ কালবেলাকে বলেন, সরকার রমজান মাসে বাজারে নিত্যপণ্যের অস্থিরতা কমাতে ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তবে বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য মিলছে না বলে অহরহ অভিযোগ পাচ্ছি আমরা। সার্বিক বিষয় তদারকি করতে আমরা শিগগিরই অভিযান শুরু করব।
তিনি বলেন, শনিবার তরমুজের বাজারে অভিযান পরিচালনা করে বাড়তি দামে বিক্রির প্রমাণ পেয়েছি। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কারা মানছে না সেই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রমাণ পাওয়াদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হবে।
ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘সরকারের বেঁধে দেওয়া ২৯টি পণ্যের দাম এখনও কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ আছে। শুক্রবার দাম নির্ধারণের পর শনিবার বাজার তদারকি করার কথা থাকলেও সরকারি কোনো সংস্থার তৎপরতা চোখে পড়েনি। এ কারণে সরকারি নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে আগের দামেই পণ্য বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। সরকারি সংস্থার তদারকির অভাবের বলি হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাদের আগের বাড়তি দামেই নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে। এখনও বাড়তি দামে পণ্য বিক্রির অহরহ অভিযোগ ভোক্তাদের কাছ থেকে পাচ্ছি আমরাও।’
মন্তব্য করুন