ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১২৮ তরুণ-তরুণী

১২০ টাকায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে চাকরি পেলেন ময়মনসিংহের ১২৮ তরুণ-তরুণী। ছবি : কালবেলা
১২০ টাকায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে চাকরি পেলেন ময়মনসিংহের ১২৮ তরুণ-তরুণী। ছবি : কালবেলা

ময়মনসিংহে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১২৮ জন তরুণ-তরুণী। কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া নিজ মেধা ও যোগ্যতায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়ে খুশিতে আত্মহারা তারা।

শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ২ টায় ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা। এতে ১০৯ জন ছেলে এবং ১৯ জন মেয়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন। ওই সময়ই তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে এবার ময়মনসিংহ জেলা থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ৫ হাজার ৭৫৯ প্রার্থী। পরে ৭ টি শারীরিক পরীক্ষা ও যোগ্যতা যাচাইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ১ হাজার ৪০৭ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেন ৩৬১ জন। পরে মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা শেষে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত হয় ১৯ নারীসহ মোট ১২৮ জন।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নন্দীবাড়ি গ্রামের নাদিয়া নাসরিন নুপুর। তার বয়স যখন সাড়ে ৩ বছর তখন বাবা নাজমুল হাসান ও মা মমতাজ বেগম সেলিনার বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে বাবা থেকেও নেই নুপুরের। মেয়েকে বড় করতে সেলাই মেশিনের কাজ শুরু করেন মা সেলিনা। এমন সংগ্রামের মধ্যেই মেয়েকে করিয়েছেন পড়াশোনা। এবার স্বার্থক হয়েছে তাদের সংগ্রাম। নিয়োগ পরীক্ষায় নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন নুপুর। কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়া পুলিশের চাকরি পেয়ে নুপুরের মতই উচ্ছ্বাসিত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ১২৮ তরুণ-তরুণী ও তাদের অভিভাবকরা।

ফল প্রকাশের পর আনন্দে উদ্বেলিত নাদিয়া নাসরিন নুপুর বলেন, খুব ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশ পুলিশে চাকরি করবো। প্রথমবার মাঠে নেমেই সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেল। শুধু তাই নয়, এক হাজারের বেশি মেয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমি জেলায় শ্রেষ্ঠ হয়েছি। আমি ও আমার মা আজ কী পরিমাণ খুশি তা বলে বোঝাতে পারবো না। নুরুল্লাহ জুবায়ের নামে আরেকজন বলেন, আমি বেশ কয়েক বছর ধরেই শুনে আসছি পুলিশে চাকরি পেতে কোনো ধরণের ঘুষ বা তদবির লাগে না। তাই এবার আমিও আবেদন করেছি। সকল ধাপ অতিক্রম করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও ভালো দিয়েছি। স্বচ্ছ নিয়োগ হয়েছে বলে আমি ১৯ তম হয়ে পুলিশের সদস্য হতে পারলাম। পরিবারের সকলের কষ্ট আজ স্বার্থক হয়েছে। মেধার ভিত্তিতেই শুধুমাত্র যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঁঞা বলেন, প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়াদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছে। অনেকের বাবা দিনমজুর, সিএনজিচালকসহ নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। একটি স্বচ্ছ নিয়োগের ফলে তারা নিজ যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে। নানা কঠিন ধাপ পেরিয়ে যারা বাংলাদেশ পুলিশের নতুন সদস্য হলেন তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন করেন এই কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমির হামজার ওপর হামলার অভিযোগ 

সম্মেলনের দাওয়াত দিয়ে রংপুরে ফেরার পথে বিএনপি নেতার মৃত্যু

আদালতে বিচারককে গুলি করে হত্যা

মাঠে নামার আগে সুখবর পেল বাংলাদেশ

একদিকে অভিযানের ট্রলার, অন্যপাশে ‘ধুমধামে’ ইলিশ শিকার

আলু খেয়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন কি

নিজের সিদ্ধান্ত বদলালেন হ্যারি কেইন

হেফাজতে ইসলামের অবরোধ প্রত্যাহার

মাত্র ১৩ গ্রাম ওজনে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ফোন

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

১০

সড়কের দশা দেখতে গিয়ে যানজটে আটকা উপদেষ্টা

১১

আফগানিস্তানের বিপক্ষে যেমন হতে পারে বাংলাদেশের একাদশ

১২

লাইসেন্সবিহীন পশুখাদ্য ও ওষুধ কারখানা সিলগালা

১৩

চট্টগ্রামে হাকিম হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির নজির : বিএনপি

১৪

জুবিনের নিরাপত্তারক্ষীর অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা লেনদেন

১৫

তরুণদের স্থূলতা কি বিপদের ইঙ্গিত

১৬

ইনজুরিতে মারুফা, পরবর্তী ম্যাচ খেলা নিয়ে যা জানা গেল

১৭

বক্স অফিসে অপ্রতিরোধ্য রঘু ডাকাত

১৮

একসঙ্গে আগুন নেভাতে যান বাবা-ছেলে, অতঃপর...

১৯

‘সংখ্যালঘু বলে কোনো কনসেপ্ট নেই’

২০
X