দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে তরমুজের দামে ধস নেমেছে। ফলে ক্রেতা সংকটে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। রোজার শুরুর দিকে বাজারে তরমুজের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্রেতা সংকটে আছেন বলে জানান পিরোজপুরের মিয়ারহাট পাইকারি বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) মিয়ারহাট পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
নেছারাবাদ উপজেলার সন্ধ্যা নদীতে এই ভাসমান বাজার। আগের রাত থেকে ট্রলার ও নৌকাযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই বাজারে তরমুজ আসে। ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে জমে উঠে বাজার। এই বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা আসে ট্রলার অথবা নৌকায় করে। ভোর থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাসমান বাজারে নৌকায় তরমুজ সাজিয়ে বসে আছেন পাইকারি বিক্রেতারা। এখন ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। তরমুজের সরবরাহ বেড়ে গেলেও বিক্রি কম। গত কয়েকদিনের তুলনায় দামও কমেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, খুচরা পর্যায়ে গিয়ে তরমুজের দাম বেড়ে যায়। পাইকারি কিনে নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা কেজি মূল্যে বিক্রি করায় মানুষ তরমুজ কম কিনছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য কেউ তরমুজ কিনতে চায় না। এ জন্য অনেক পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার লাখ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে।
রোজার শুরুতে খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হয়েছিল। এরপর সরবরাহ বেড়ে গেলে খুচরা বাজারেও দাম কমতে শুরু করে। এখন পিস হিসেবে বিক্রি করলেও ক্রেতাদের আগ্রহ নেই।
পাইকারি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, এবারে তরমুজ ব্যবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে। আমাদের কাছ থেকে খুচরা দোকানদাররা পিস হিসেবে কিনে নিলেও তারা কেজি মূলে বিক্রি করেছে রোজার প্রথমদিকে। এখন পিস হিসেবে বিক্রি করলেও ক্রেতাদের মনে পূর্বের দামের আতঙ্ক চলছে। এখন অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করলেও ক্রেতা তরমুজ খেতে চায় না।
তরমুজ আড়তদার মকবুল হোসেন বলেন, এখন তরমুজ খাওয়ার উত্তম সময়। এখন তরমুজের আমদানি থাকলেও ক্রেতা না থাকায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এ বছর আমার ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হবে।
নেছারাবাদ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা চপল কৃষ্ণ নাথ কালবেলাকে বলেন, এই সময়টা তরমুজ পরিপক্ক হওয়ার উপযুক্ত সময়। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাস পর্যন্ত পরিপক্ব হওয়ার মৌসুম। কিন্তু আমাদের অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা তরমুজ পরিপক্ক হওয়ার আগেই বাজারে নিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, তরমুজের উচ্চদাম নিয়ে যে ভীতি কাজ করছে তা সরকারের হস্তক্ষেপে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বাজার থেকে তরমুজ কিনলে পরিপক্ব ও ন্যায্যমূল্যে তরমুজ কিনতে পারবে সবাই।
মন্তব্য করুন